সিঙ্গাইরে শাশুড়িকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ, গৃহবধূ আটক

ছুরিকাঘাত
প্রতীকী ছবি

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতে শাশুড়িকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জামশা ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলের বউকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত নারীর নাম তহুরা বেগম (৫২)। তিনি মাটিকাটা গ্রামের সোনামুদ্দিন বিশ্বাসের স্ত্রী। ঘটনার পর সোনামুদ্দিন তাঁর স্ত্রীকে হত্যার বিষয়ে পুত্রবধূর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, প্রায় আড়াই মাস আগে তহুরা বেগমের ছেলে মালয়েশিয়াপ্রবাসী রাসেল বিশ্বাসের সঙ্গে পাশের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা গ্রামের আইরিন আক্তারের (১৯) বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২ জানুয়ারি রাসেল মালয়েশিয়া চলে যান। তবে বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শাশুড়ি ও ছেলের বউয়ের মধ্যে কলহ চলে আসছিল। গতকাল রাতে শ্বশুর ঘুমিয়ে পড়ার পর শাশুড়ি ও ছেলের বউ ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। এ সময় পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে শাশুড়িকে টর্চলাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন আইরিন। এ সময় তহুরা চিৎকার দিলে তাঁর মুখ কাপড় দিয়ে চেপে ধরে ছুরিকাঘাত করেন আইরিন। পরে তহুরা ঘটনাস্থলে মারা যান। তাঁর লাশ ঘর থেকে টেনে বের করে বারান্দার পাশে শৌচাগারে নিয়ে যান। সেখানে রক্তমাখা কাপড় পাল্টে লাশ গুম করতে টেনে ঘরের বাইরে বের করেন। এরই মধ্যে শ্বশুর সোনামুদ্দিনের ঘুম ভেঙে গেলে তিনি উঠানে যান। সেখানে শ্বশুরকেও ছুরিকাঘাত করেন পুত্রবধূ। এতে সোনামুদ্দিনের ঠোঁট কেটে যায়। এরপর তিনি আইরিনের কাছ থেকে কৌশলে ছুরি কেড়ে নেন। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে আইরিনকে আটক করেন। খবর পেয়ে আজ বুধবার ভোর চারটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তহুরার লাশ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ সময় পুলিশ আইরিনকে আটক করে।

জামশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গাজী কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর আজ সকালে তিনি ওই বাড়িতে যান। সোনামুদ্দিন ও তাঁর প্রতিবেশীরা তাঁকে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। এ নিয়ে তাঁদের পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। এর জেরেই এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশের হেফাজতে থাকায় অভিযুক্ত আইরিন আক্তারের সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, টর্চলাইট ও ছুরি দিয়ে আঘাত করে তহুরাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। অভিযুক্ত ছেলের বউকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।