প্রয়াণদিবসে নানা আয়োজনে কেন্দুয়ায় হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ

লেখকের নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

প্রয়াণদিবসে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে কেন্দুয়ার কুতুবপুর গ্রামে লেখকের নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে দশম মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু হয়।

সেখানে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, লেখকের অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, শোক র‍্যালি, আলোচনা সভা, পবিত্র কোরআন পাঠ, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় জেলা প্রেসক্লাবের সম্মেলনকক্ষে হিমু পাঠক আড্ডার আয়োজনে ‘স্মরণকথন’ নামে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

কেন্দুয়ায় শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে আয়োজিত আলোচন সভার সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান। সহকারী প্রধান শিক্ষক শরীফ আনিস আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে হুমায়ূন আহমেদের চাচাতো ভাই ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য বখতিয়ার আহমেদ, স্কুলশিক্ষক তুহিন সরকার, মাহবুব আলম, বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।

সভাপতির বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হুমায়ূন আহমেদ একজন যথার্থ শিল্পী ছিলেন। তিনি মাটি, বাতাস, রোদ, বৃষ্টি ও প্রকৃতির ঘ্রাণ উপলব্ধি করতেন। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি শিল্প রচনা করেছেন। তাই তাঁর শিল্প সবার কাছে এত গ্রহণযোগ্য।

হুমায়ূন আহমেদের স্বজন বখতিয়ার আহমেদ বলেন, হুমায়ূন আহমেদ জীবনভর মানবমুক্তির গান গেয়েছেন। তিনি অবহেলিত এই এলাকার মানুষকে আলোর পথ দেখাতে নিজ হাতে বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। এই শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়টিকে নিয়ে তাঁর অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই এসএসসিতে অংশ নেওয়া প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীই ভালো ফলাফল অর্জন করছে।

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করা হচ্ছে
ছবি: প্রথম আলো

এদিকে স্মরণকথন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রাবন্ধিক হায়দার জাহান চৌধুরী। হিমু পাঠক আড্ডার প্রতিষ্ঠাতা আলপনা বেগমের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন ছড়াকার শ্যামলেন্দু পাল, নেত্রকোনা মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চিত্রশিল্পী কামরুল হাসান, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কবি অনুপ সাদি, গবেষক সঞ্জয় সরকার প্রমুখ।

হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, হুমায়ূন আহমেদ শুধু পাঠকই তৈরি করেননি; একজন মানুষ হিসেবে যে ব্যাপকতা, তা তিনি জীবনভর ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন। আইনশৃঙ্খলার নানান অসঙ্গতি তিনি তাঁর লেখা বা নাটকে বলেছেন, বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের কথা বলেছেন। একটি পাখির মুখ দিয়ে রাজাকারকে ‘রাজাকার’ বলিয়েছেন, অন্যায়–অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তিনি অমর হয়ে থাকবেন।