যুবককে হত্যার দুই দশক পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ওমর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল শনিবার রাতে র‌্যাবের মানিকগঞ্জ ক্যাম্পে
ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় এক যুবককে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে ২০ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল শনিবার গভীর রাতে ঢাকার সাভার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম ওমর আলী (৬৬)। তাঁর বাড়ি সিঙ্গাইর উপজেলার গাজিন্দা গ্রামে। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি ২০ বছর পালিয়ে ছিলেন। র‍্যাব-৪–এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হাসান আজ রোববার সকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

র‍্যাব জানায়, জমিজমা নিয়ে সিঙ্গাইরের গাজিন্দা গ্রামের বাসিন্দা রুবেলের বাবা সামছুল হকের সঙ্গে একই গ্রামের ওমর আলীর বিরোধ চলে আসছিল। ২০০১ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে বিরোধপূর্ণ জমিতে চাষাবাদকে কেন্দ্র করে সামছুল ও তাঁর ছেলে রুবেলের সঙ্গে ওমর আলীর কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে ওমর আলী সামান্য আঘাত পান। এ ঘটনার দুই দিন পর গ্রামের একটি মাঠে একা পেয়ে ওমর আলী ও তাঁর সহযোগী ইব্রাহিম হোসেন, আবদুর রাজ্জাক, হানিফ আলীসহ কয়েকজন দেশি অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রুবেলকে হত্যা করেন। এরপর লাশ বস্তায় ভরে মাঠের পাশের নালায় ফেলে দিয়ে তাঁরা পালিয়ে যান। এদিকে সামছুল হক তাঁর ছেলেকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে সিঙ্গাইর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে নালার মধ্য থেকে রুবেলের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত যুবক রুবেলের বাবা সামছুল হক বাদী হয়ে ওমর আলী ও তাঁর সহযোগী ইব্রাহিম হোসেন, আবদুর রাজ্জাক ও হানিফের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরবর্তী সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৭ মাস কারাবাস শেষে জামিনে মুক্তি পান আসামিরা। জামিন পাওয়ার পর আসামি ওমর আলী আত্মগোপনে চলে যান। মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারনামীয় আসামি ওমর আলী, ইব্রাহিম, রাজ্জাক ও হানিফকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর ২০০৩ সালে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ওমর আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অপর আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হাসান বলেন, জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ওমর আলী আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তী সময় তিনি ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে আত্মগোপনে থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। গোয়েন্দা নজরদারি ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে র‍্যাবের মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল গতকাল দিবাগত রাত একটার দিকে সাভারের বলিয়ারপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আজ সকালে তাঁকে সিঙ্গাইর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, আদালতের রায়ের নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।