শেরপুরে পূর্ববিরোধ ও জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১৫

বগুড়া জেলার মানচিত্র

বগুড়ার শেরপুরে পূর্ববিরোধ ও জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত চার দফায় উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের আওলাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর আহত তিনজনকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষে আহত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন ফিরোজ আহম্মেদ (৩০) জানান, সম্প্রতি তাঁদের গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই দিন গ্রামের রাকিব খানের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে গত শুক্রবার রাকিব খান ও তাঁর সহযোগীরা মাতব্বর মঞ্জুর রহমানকে (৫০) লাঞ্ছিত করেন। তখন গ্রামের লোকজন এর প্রতিবাদ করেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামের বাজারে রাকিব খান ও ইউনুছ আলীর লোকজন তাঁদের ওপর লাঠিসোঁটা ও রড নিয়ে হামলা চালান। এতে তিনি (ফিরোজ), তাঁর বাবা জয়নাল আবেদীন (৫৫), ছোট ভাই মো. সোহেল (২৪), মঞ্জুর রহমান (৫০), জুয়েল রানা (২৮), আবদুল হান্নান (২৭) ও আবদুল মান্নান (৩৫) আহত হন।

ওই দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউনুছ আলী (৩৭), মো. বাদশা (৪৫), আবদুল লতিফ (৩০), আবদুল হাই (৫২), শিল্পী খাতুন (৪৫) ও ডলি খাতুনও (৩০) আহত হন।

ওই ঘটনার পর রাত আটটায় ইউনুছ আলীর নেতৃত্বে গ্রামের সেচযন্ত্রের মালিক আবু হাশেম (৬০) ও রাজু আহম্মেদের (৪০) ওপর হামলা করা হয়। এতে তাঁরা দুজন আহত হন। ইউনুছ আলী ও আবু হাসেম সেচযন্ত্রের মালিক। জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।

আহত আবু হাশেম বলেন, গ্রামে জমিতে পানি সরবরাহ নিয়ে ইউনুছ আলীর সঙ্গে তাঁদের বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি না হওয়ায় আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। শনিবার রাতে হামলায় আহত জয়নাল আবেদীনের পরিবারসহ অন্যরা তাঁর সেচযন্ত্র থেকে জমিতে পানি নেন। এ কারণে প্রতিপক্ষ ইউনুছ আলীসহ তাঁদের লোকজন তাঁর ওপরে হামলা করেন।

এ সম্পর্কে ইউনুছ আলী বলেন, ‘গ্রাম্য প্রধানের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ ফিরোজ আহম্মেদের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। খবর পেয়ে বাড়ির মেয়েরা আমাদের উদ্ধার করতে এলে প্রতিপক্ষ তাঁদের ওপর হামলা করে।’

শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে আহত ১৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। ১২ জনকে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গুরুতর আহত মো. বাদশা, আবদুল লতিফ ও আবদুল হাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সুঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের পর শনিবার রাতে গ্রামে পুলিশ আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। নতুন করে সংঘর্ষ এড়াতে সব পক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে শনিবার রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আর যাতে সংঘর্ষ না হয়, সে জন্য পুলিশের বিশেষ নজরদারি চলছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।