ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনসিপি নেত্রীকে মারধরের অভিযোগে দলের ৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নারীনেত্রীকে মারধরের অভিযোগে দলের দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহসহ পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্রুত বিচার) আদালতে মামলার আবেদন করেন ওই নারী। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন এনসিপির বিজয়নগর উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী ও জেলা কমিটির ১ নম্বর সদস্য আমিনুল হক চৌধুরী (৫০), আখাউড়ার প্রধান সমন্বয়কারী ইয়াকুব আলী (৪২), সদস্য সাকিব মিয়া (২৫) ও রতন মিয়া (৪২)। ভুক্তভোগী নারী জেলা এনসিপির সদস্য। মামলায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামীসহ জেলা এনসিপির কয়েকজন নেতাকে সাক্ষী করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, মাসখানেক আগে বাদী ও সাক্ষীরা এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঙ্গে ছবি তোলেন। সেই ছবি বাদীর স্বামী আখাউড়া এনসিপির গ্রুপে পাঠালে আসামিরা ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনায় বাদীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা লেখেন আসামি সাকিব। এতে সম্মানহানি হলে বাদী এনসিপি নেতা মো. আতাউল্লাসহ অন্যদের কাছে বিচার দেন। কিন্তু আতাউল্লাহ বিচার না করে বাদীকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় অন্য আসামিদের তাঁর পেছনে লেলিয়ে দেন।
আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৯ নভেম্বর বাদীসহ সাক্ষীরা শহরের পৈরতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জেলা এনসিপির কার্যালয়ে গিয়ে আমিনুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে এনসিপির অন্য নেতারা বাদী ও তাঁর স্বামীর ওপর ক্ষুব্ধ হন। তখন এনসিপি নেতা আতাউল্লার ইন্ধনে আসামিরা বাদীকে চড়থাপ্পড় ও লাথি মারেন। এ সময় বাদীর গলা থেকে এক ভরি দুই আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ভবিষ্যতে তাঁদের কথামতো না চললে বাদী ও তাঁর স্বামীর অবস্থা খারাপ হবে বলে হত্যার হুমকি দেন। বাদী পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
জানতে চাইলে মামলার বাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পেটে লাথি ও মারধরের শিকার হওয়ার পর থেকে শারীরিকভাবে আমি অসুস্থ। আমি নিজের হাতে মামলার কপি পুলিশের কাছে দিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।’
অভিযোগের বিষয়ে ইয়াকুব আলী বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ে ভাড়া করা সন্ত্রাসী এনে আমাকে মারধর করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে। আর মামলায় আতাউল্লাহ ভাইকে আসামি করা হয়েছে; অথচ তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। ওই নারী সদস্য অনেকের কাছে অভিযোগ করেছেন। সাকিব নাকি তাঁকে বকাঝকা করেছেন। এই ক্ষোভে তিনি মামলা করেছেন।’
এনসিপি নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব। এখনো মাঠে নামি নাই। মাঠে নামার প্রস্তুতি নিয়ে রেখিছি। মাঠে নামার আগে আমি যেন আঘাত পাই, সে জন্য এমন করা হচ্ছে। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন করা হয়েছে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, আদালতে মামলা দায়েরের বিষয়টি শুনেছেন। কিন্তু আদালত থেকে কোনো নথি এখনো থানায় এসে পৌঁছায়নি।