অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, স্বামী পলাতক
সিলেটের কানাইঘাটে স্বামীর বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত হয়ে ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী পলাতক।
অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর নাম কুটি হুনা বেগম (২২)। তিনি কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের আক্তার হোসেনের স্ত্রী (৩১)। তাঁর বাবার বাড়িও একই গ্রামে। গত শনিবার রাতে কুটি তাঁর বাবার বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হন। এরপর পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় মানুষেরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রতিবেশী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে পারিবারিকভাবে আক্তার হোসেনের সঙ্গে কুটির বিয়ে হয়। কুটির পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল। আক্তারের পরিবার এলাকায় কিছুটা প্রভাবশালী। বিয়ের পর থেকে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে স্ত্রীকে অত্যাচার করতেন। এর মধ্যে কুটি অন্তঃসত্ত্বা হন। সম্প্রতি স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। গত শনিবার রাতে কুটি তাঁর বাবার বাড়িতে শুয়ে ছিলেন। এ সময় আক্তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান। কুটির চিৎকারে পরিবারের সদস্য এবং আশপাশের মানুষ এগিয়ে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, অগুনে দগ্ধ গৃহবধূর শরীরের প্রায় ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। সাধারণত ২৫ শতাংশের ওপরে দগ্ধ হলে বিষয়টি জটিল হয়ে দাঁড়ায়। হাসপাতাল থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আহত নারীর পরিবার আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় তাঁরা সেটি পারছেন না। দগ্ধ অবস্থায় রোববার ওই গৃহবধূ মৃত সন্তান প্রসব করেছেন।
লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফখর উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আক্তার হোসেন বখাটে ধরনের লোক। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। মেয়েটির পরিবার এলাকায় নিরীহ এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল। ঘটনা জানার পরপরই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই আক্তার হোসেন এলাকাছাড়া।
সিলেটের কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এরপরও ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে জড়িত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।