সাভার ও ধামরাইয়ে ২৪ ঘণ্টায় ৬ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং

লোডশেডিং
ফাইল ছবি

ঢাকার সাভার ও ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এলাকাভেদে তিন থেকে ছয় ঘণ্টার অধিক সময় লোডশেডিং স্থায়ী হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এবং এর আওতাধীন ধামরাই আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ধামরাই পৌরসভার আওতাধীন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ( সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত) তিন দফায় সাড়ে তিন ঘণ্টা এবং পৌরসভার বাইরের এলাকাগুলোতে চার দফায় সাড়ে চার ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাভার পৌর এলাকা ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে পাঁচ থেকে ছয় দফায় ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে।

ধামরাই আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের সরবরাহ কম। গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় চাহিদা ছিল ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। বিপরীতে বিদ্যুৎ মিলেছে ৫৪ মেগাওয়াট। আজ বেলা ১১টায় ৭৪ মেগাওয়াট প্রয়োজন হলেও সরবরাহ ছিল ৫৪ মেগাওয়াট। এদিকে বেলা দুইটার দিকে চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল।

ধামরাই পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সিফাত আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ যাচ্ছে না আসতেছে, সেটা বলা মুশকিল। তবে আজকের (সোমবার) অবস্থা গতকালের তুলনায় একটু ভালো।’

ধামরাইয়ের শরিফবাগ গ্রামের মো. মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরে কিছুক্ষণ পরপর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। দিনে চার-পাঁচবার করে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। প্রতিবারই ঘণ্টাখানেক লোডশেডিং স্থায়ী হচ্ছে।

ধামরাই আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আল মাহমুদ ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যুতের সরবরাহের ঘাটতি হলে আমাদের কিছু করার থাকে না। প্রয়োজনের তুলনার বিদ্যুৎ না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।’

এদিকে সাভার উপজেলার সাভারের পৌর এলাকা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর আওতাধীন শিমুলতলা আঞ্চলিক কার্যালয়, পুলিশ টাউন সাবস্টেশন, জাহাঙ্গীরনগর, রাজাশন সাবস্টেশন ও ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কর্মকর্তারা জানান, সাভার উপজেলার বাইরে অন্যান্য এলাকাসহ সাভারের আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা ও সাভারের কিছু অংশে এখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে তাদের চাহিদা ছিল ৩৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তবে ওই সময় সরবরাহ ছিল ২৪১ মেগাওয়াট।

সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খাগান এলাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সারা দিন চারবার লোডশেডিং হইছে। প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় বিদ্যুৎ ছিল না। একে তো গরম, এর মধ্যে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।’

ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোল্লা মো. আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, শিল্পাঞ্চল হিসেবে সাভারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি সব সময়ই গুরুত্বসহ দেখা হয়। বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রয়োজনের বিষয়টিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে প্রতিদিন প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে। তাই বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দিয়ে সমন্বয় করতে হচ্ছে।