নোয়াখালীতে বিএনপি ও জামায়াতের আরও ৩০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার, গায়েবি মামলার অভিযোগ বিএনপির

নোয়াখালীতে বিএনপির অবরোধের প্রথম দিনে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। আজ দুপুরে সোনাপুর জিরো পয়েন্ট এলাকায়
ছবি প্রথম আলো

নোয়াখালীতে বিএনপি ও জামায়াতের আরও ৩০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত তিন দিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে দল দুটির ১৫১ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হলো। একই সময়ে জেলার বিভিন্ন থানায় বিএনপি ও জামায়াতের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা ৩৮৫ জন। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে নতুন করে গ্রেপ্তার এবং মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলমান গ্রেপ্তার অভিযানে বিএনপি ও জামায়াতের ৩০ নেতা-কর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে সুধারামের তিনজন, হাতিয়ায় এক, কোম্পানীগঞ্জে পাঁচ, বেগমগঞ্জ ৯, সেনবাগে ‍দুই, চাটখিল এক, সোনাইমুড়ীতে দুই, সুবর্ণচরের চর জব্বরে তিন, কবিরহাটে এক এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ নিয়ে গত তিন দিনে জেলার বিভিন্ন থানা থেকে বিভিন্ন মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের ১৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

এদিকে সুধারাম থানা সূত্রে জানা গেছে, গত রোববারের হরতালে পিকেটিং, গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সাজু বড়ুয়া এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. জয়নাল আবদীন বাদী হয়ে ওই দুটি মামলা করেন। এর মধ্যে থানা-পুলিশের করা মামলায় সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের করিমপুরের বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা, ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ করা হয়েছে। এই মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ৭৭ জনকে। অপর দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) করা মামলায় ঘটনাস্থল শহরের সোনাপুর এলাকায় জেলা পরিষদের সামনের পাকা সড়কের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ও সরকারি স্থাপনার ক্ষতিসাধনের অভিযোগ করা হয়েছে। এই মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ৩২ জনকে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান অভিযোগ করেছেন, ঢাকায় মহাসমাবেশ এবং পরবর্তীতে দল ঘোষিত হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দায়েরে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কোনো ধরনের ঘটনা ছাড়াই জেলাব্যাপী একের পর এক গায়েবি মামলা করা হচ্ছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। আবদুর রহমান বলেন, গায়েবি মামলার ফলে পুলিশের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা সম্পূর্ণ উঠে যাচ্ছে। কারণ, কোনো মিছিল, মিটিং কিংবা পিকেটিং হয়নি—এমন এলাকায়ও মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা দিচ্ছে পুলিশ।

গায়েবি মামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।