ভাতার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় নৌকার প্রার্থীকে শোকজ

ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন ইউনিয়নে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন রমেশ চন্দ্র সেন। বুধবার বিকেলেছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সমর্থকেরা ভোট দিতে না গেলে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে তাঁদের নাম কাটা যাবে, এমন বক্তব্য দেওয়ায় ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. লুৎফর রহমান তাঁকে এ নোটিশ পাঠান। আগামী শনিবার বেলা ১১টায় সশরীর হাজির হয়ে তাঁকে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গতকাল বুধবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের পোকাতি সেন্টার হাটে এক নির্বাচনী জনসভায় রমেশ চন্দ্র সেন ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোসহ উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, যা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর এমন বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২–এর ৭৭ (৩) (খ) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮–এর ১১ (ক) ধারার লঙ্ঘন।

আইন ভঙ্গের কারণে কেন সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ২৩ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় সশরীর উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নোটিশে। এ বিষয়ে কথা বলতে রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৭৭ (৩) (খ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো ভোটারকে ভোট দিতে বাধা দেন কিংবা প্ররোচিত করেন, তাহলে তিনি অসংগত প্রভাব বিস্তারের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন। আর আচরণবিধির ১১ (ক) ধারায় বলা হয়, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা মনোনীত ব্যক্তি বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাঁদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন চলাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে বক্তব্য দেন বা কোনো ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন বক্তব্য দিতে পারবেন না।

আরও পড়ুন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নে পোকাতি সেন্টার হাটে নির্বাচনী জনসভায় রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ‘বিএনপির যেসব ফ্লোটিং ভোটার, তাঁরা যেন ভোট দিতে যান। যদি ভোট দিতে না যান, আর যদি তাঁরা সুবিধাভোগী হন, তাহলে তালিকা থেকে তাঁদের নাম কাটা যাবে। আমরা কিন্তু এককথার লোক। আমি দিয়েছি, আমি কাটব। আর যদি আপনারা যান, সেখানে সব সেন্টার কমিটির ছেলেপেলে থাকবে, সভাপতি-সম্পাদক থাকবেন, তাঁরা কিন্তু মার্ক করবেন। প্রত্যেকটা মার্ক করবেন। যদি না যান, তাহলে কিন্তু সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’