সিলেটে অটোরিকশাচালক হত্যার ঘটনায় মামলা, মৃতদেহের বাকি অংশ উদ্ধার
সিলেটে অটোরিকশাচালক রণজিৎ সরকার (৫৮) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে নিহত ব্যক্তির ছেলে শংকর সরকার বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করেন। মামলায় রণজিৎ হত্যাকাণ্ডে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেওয়া অটোরিকশাচালক আবদুল মালেককে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাতনামা দু-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত রণজিৎ সরকার সিলেট শহরতলির টুকেরবাজারের দুস্কি এলাকার বাসিন্দা। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের বালুচর এলাকার এমসি কলেজের ছাত্রাবাস-সংলগ্ন ছড়া থেকে দুটি আলাদা বস্তায় তাঁর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। একই রাতে আবদুল মালেক (৪০) নামের নগরের বাদামবাগিচা এলাকার এক বাসিন্দা আত্মহত্যার চেষ্টা চালালে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মালেক পুলিশকে রণজিৎ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।
এ ঘটনার পরও রণজিতের মৃতদেহের খণ্ডিত কিছু অংশ পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ পরে মালেককে আরেক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন তিনি পুলিশকে লাশের খণ্ডিত বাকি অংশের সন্ধান দেন। গতকাল রাতে নগরের বালুচর এলাকা থেকে একটি বস্তায় নিহত রণজিতের শরীরের বাকি অংশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রণজিৎ ও মালেক পূর্বপরিচিত ছিলেন। দুজনই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। কয়েক দিন আগে অটোরিকশার সংঘর্ষ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। গত শুক্রবার রণজিৎ নিখোঁজ হলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন স্বজনেরা। পুলিশ রণজিতের মুঠোফোনের সূত্র ধরে মালেকের খোঁজ পেয়ে তাঁকে নজরদারিতে রাখে। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাতে নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান মালেক। ‘মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ বলে চিরকুটও লিখেছিলেন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, হাসপাতালে নেওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে রণজিৎ সরকারের লাশের সন্ধান দেন মালেক। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুটি বস্তায় রণজিতের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরও রণজিতের শরীরের কিছু অংশ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জিজ্ঞাসাবাদে মালেক আরেকটি বস্তার সন্ধান দিলে পুলিশ শরীরের বাকি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে। এরপর নিহত ব্যক্তির অটোরিকশার সন্ধানে নামে পুলিশ। আজ রাতে সেটি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তবে কোথা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এখনো নিশ্চিত করেনি।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডটির রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ব্যাটারি ও অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।