সমাবেশ ডেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন সংসদ সদস্য
নোয়াখালীর সেনবাগে এবার পাল্টা সমাবেশ ডেকে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। তাঁদের বললেন, ‘বসন্তের কোকিল’। সমাবেশে তিনি দাবি করেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেতে দলের একটি অংশ তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। মোরশেদ আলম বলেন, ‘যাঁরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাঁরা দলছুট। কখনো আওয়ামী লীগ করেন, কখনো বিএনপি। উড়ে এসে জুড়ে বসার পর লম্বা বুলি আউড়িয়ে, টাকাপয়সা দিয়ে লোকজন জড়ো করে, বড় বড় মিছিল করে, কোনো লাভ হবে না। হঠাৎ করে এসে নৌকা চাইলেই প্রধানমন্ত্রী দেবেন না।’
আজ সোমবার দুপুরে সেনবাগ উপজেলার ছমির মুন্সির হাট বাজারে এই ‘শান্তি সমাবেশের’ আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ছমির মুন্সির হাট বাজারে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের বিরোধী হিসেবে পরিচিত পাঁচ নেতার অনুসারীরা এক হয়ে শান্তি মিছিল ও সমাবেশ করেন। ওই সমাবেশে সংসদ সদস্যকে ইঙ্গিত করে এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড না হওয়া, দলের কমিটি না দেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম সমাবেশে তাঁর বিরোধীদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, ন্যায়নীতিতে বিশ্বাসী। এখানে বসন্তের কোকিলের মতো উড়ে এসে জুড়ে বসে কোনো লাভ হবে না। আমি গত ১০ বছরে অনেক উন্নয়ন করেছি। কোনো মারামারি-হানাহানি করিনি। বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ যত দিন থাকবে, আওয়ামী-যুবলীগ-ছাত্রলীগ মাঠে থেকে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করবে।’
মোরশেদ আলম দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যে যা-ই বলুক, কোনো লাভ হবে না। এখানকার সব খতিয়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আছে। তিনি এখানে যাঁকে নৌকার টিকিট দেবেন, তিনি নির্বাচন করবেন। তার আগপর্যন্ত কারও কথায় কান না দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতে হবে।’
সমাবেশে এ ছাড়া বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শামছুদ্দিন রিয়াদ প্রমুখ। সমাবেশ চলাকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কয়েক দফায় হট্টগোল হয়েছে।
সেনবাগে সংসদ সদস্যের প্রতিপক্ষের হিসেবে পরিচিত পাঁচ নেতা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া, সেনবাগ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর, পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা জামাল উদ্দিন আহমেদ এবং ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা শিহাব উদ্দিন।
গত বৃহস্পতিবারের সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনা সারা বাংলাদেশের কোথাও কোনো কাঁচা রাস্তা রাখেননি। অথচ সেনবাগে এখনো কাঁচা রাস্তা। এখানে কাঁচা রাস্তা কেন থাকবে? গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগকে এলাকায় সংগঠিত ও শক্তিশালী হতে দেওয়া হয়নি। পৌর আওয়ামী লীগের কোনো কমিটি নেই। যুবলীগের কোনো কমিটি নেই।’