দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় পানির সংকট নিরসনে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি

বুধবার দুপুরে খুলনা পিকচার প্যালেস মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধনে খুলনার বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেনছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট নিরসনে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন খুলনার বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণি–পেশার মানুষ। আজ বুধবার দুপুরে খুলনা পিকচার প্যালেস মোড়ে লিডার্স, ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ, খুলনা জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি তুলে ধরা হয়।

এ দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে খুলনার পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চ, হিউম্যানিটিওয়াচ, বেলা, ছায়াবৃক্ষ, গতিসহ অন্যান্য সংগঠন। জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সহসভাপতি ও বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সিডিপির বিভাগীয় সমন্বয়কারী এস এম ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাজনৈতিক সংগঠক মিজানুর রহমান, বাপার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী বাবুল হাওলাদার, ফোরামের নির্বাহী সদস্য শামীমা সুলতানা, পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, ছায়াবৃক্ষের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আলম, হিউম্যানিটিওয়াচের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান বলেন, ভৌগোলিক ও মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে সুপেয় পানির সংকট অত্যন্ত প্রকট। এ সংকট দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় সবচয়ে বেশি। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পানিসংকটের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী ১৯টি জেলায় প্রায় ৩ কোটি ৯০ লাখ মানুষের বসবাস। তবে আধারযোগ্য পানি সংগ্রহ করতে না পারায় এখানকার প্রায় তিন কোটি মানুষ ভূগর্ভের লবণাক্ত পানি পানে বাধ্য হচ্ছেন।

বাপার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী বাবুল হাওলাদার বলেন, সারা দেশে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও উপকূলীয় অঞ্চল বরাবরই অবহেলিত। বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত দেশের এই অংশে বসবাসরত মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি সহসাই পরিলক্ষিত হয়। শত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও কয়েকটি মেগা প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেগুলোর বাস্তবায়ন গতি অতীব শ্লথ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বন্যা, চিংড়ি চাষ, ভূগর্ভের পানির লবণাক্ততার কারণে গত কয়েক বছরে সুন্দরবন এলাকায় সুপেয় পানির সংকট বেড়েছে। সুন্দরবন উপকূলে ৭৩ শতাংশ পরিবার সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত বা খারাপ পানি খেতে বাধ্য হয়। সমাবেশে বক্তারা খুলনা নগরীতে সুপেয় পানি সরবরাহে খুলনা ওয়াসার ব্যর্থতা তুলে ধরেন। এ ছাড়া মধুমতী নদীতে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ার জন্য ওয়াসাকে দায়ী করেন।

এ ছাড়া বক্তারা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা, দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া, এসব এলাকায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধি বাড়ানো, উপকূলীয় সব মানুষের জন্য পানযোগ্য পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করা, গ্রহণকৃত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুত করা, উপকূলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।