নোয়াখালীতে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তিন চিকিৎসকসহ চারজনের নিবন্ধন বাতিল

চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন চিকিৎসক ও এক স্বাস্থ্য সহকারীর নিবন্ধন সাময়িকভাবে বাতিল করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. লিয়াকত হোসেনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সাময়িকভাবে নিবন্ধন বাতিল হওয়া চারজন হলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ আক্তার হোসেন, ফৌজিয়া ফরিদ ও সাওদা তাসনীম এবং স্বাস্থ্য সহকারী জাহেদ হাসান। তাঁদের মধ্যে ফৌজিয়া ফরিদ ও আক্তার হোসেনের তিন বছরের জন্য, চিকিৎসক সাওদা তাসনীমের এক বছরের জন্য এবং স্বাস্থ্য সহকারী জাহেদ হাসানের ছয় মাসের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাঁরা চিকিৎসা দিতে পারবেন না এবং নিজেদের চিকিৎসক ও চিকিৎসা সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞাটি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে।

বিএমডিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তিন চিকিৎসক ও এক স্বাস্থ্য সহকারীর বিরুদ্ধে প্রসূতি উম্মে সালমার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে বিএমডিসি আইন অনুযায়ী তাঁদের নিবন্ধ সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে।

বিএমডিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা উম্মে সালমা চিকিৎসার জন্য জেলা সদরের মাইজদীতে বেসরকারি সাউথ বাংলা হাসপাতালে আসেন। সে সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আক্তার হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ফৌজিয়া ফরিদ রোগীর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এতে মা ও সন্তানের মৃত্যু হয়। এ সময় ঘটনা ধামাচাপা দিতে চিকিৎসক আক্তার হোসেন তাঁর স্ত্রী ফৌজিয়া ফরিদসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের কথা বলে তাঁকে কুমিল্লায় পাঠিয়ে দেন।

পরবর্তী সময়ে প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় উম্মে সালমার বাবা সাংবাদিক এম এ আউয়াল বাদী হয়ে মামলা করেন। এম এ আউয়াল বলেন, ‌‌‘তাঁরা অনুমতি ছাড়া আমার একমাত্র মেয়ের অপারেশন করেছেন। এতে মেয়ে ও নবজাতকের মৃত্যু হয়। তাদের হত্যা করা হয়েছিল। আমি প্রথমে মৌখিক ও পরে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’

এম এ আউয়াল বলেন, বিএমডিসি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে সমাজে অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে একটি বার্তা যাবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন চিকিৎসক মরিয়ম সিমি প্রথম আলোকে বলেন, বিএমডিসির সিদ্ধান্তের বিষয়টি পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন। একই সঙ্গে অভিযোগকারী ব্যক্তিও তাঁকে জানিয়েছেন। তবে আদেশের কোনো চিঠি তিনি এখনো পাননি।