গাইবান্ধায় দাদির বয়স্ক ভাতার টাকার জন্য ফুফাতো ভাইকে হত্যা: পুলিশ

গাইবান্ধা জেলার মানচিত্র

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে স্কুলছাত্র জিৎচন্দ্র বাদ্যকর (১১) হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনের কথা জানিয়েছে পুলিশ। দাদির বয়স্ক ভাতার টাকা তুলতে জিৎচন্দ্রকে তাঁর দুই মামাতো ভাই মিলে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের বগুলাগাড়ি গ্রামের করতোয়া নদীর তীরবর্তী একটি ভুট্টাখেত থেকে জিৎচন্দ্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার বিকেলে জিৎচন্দ্র বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। সে ওই গ্রামের রণজিৎ চন্দ্রের ছেলে। জিৎ স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত।

এ ঘটনায় জিৎচন্দ্রের বাবা রণজিৎ কুমার বাদ্যকর বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। শনিবার রাতে পুলিশ জিৎচন্দ্রের দুই মামাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের একজনের নাম বিশ্বনাথ (২২)। আরেকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর (১৫)।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জিৎচন্দ্র বাদ্যকরের নানি প্রতিমা বালা (৬০)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মুঠোফোনের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। জিৎচন্দ্র তাঁর নানির সেই মুঠোফোন ব্যবহার করত। সম্প্রতি জিৎচন্দ্রের মামাতো ভাই (১৫) বয়স্ক ভাতার টাকা নিতে পরিকল্পনা করে। এ জন্য সে (১৫) জিৎচন্দ্রের মুঠোফোন থেকে সিম খুলে নেয়। বিষয়টি জিতের মা জানতে পেরে সিম নিয়ে আসেত বলেন। পরে জিৎ সিম ফেরত চাইলে তার মামামো ভাই (১৫) ক্ষুব্ধ হয়। এরপর সে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে ‘ক্রাইম পেট্রোল’ নামের একটি সিরিজ দেখে জিৎচন্দ্রকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পুলিশ বলছে, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সিম ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে জিৎচন্দ্রকে করতোয়া নদীর তীরবর্তী ভুট্টাখেতে ডেকে নিয়ে যায় ওই কিশোর ও বিশ্বনাথ। সেখানে জিৎচন্দ্রকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়। এর পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ভুট্টাখেতেই লাশ রেখে যায়। পরদিন শনিবার দুপুরে ভুট্টাখেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোবিন্দগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার জানান, একটি বয়স্ক ভাতার টাকাকে কেন্দ্র করে জিৎচন্দ্রকে হত্যা করা হয়েছে। আসামি (১৫) ক্রাইম পেট্রোল দেখে এ হত্যার পরিকল্পনা করে। সিম থেকে বয়স্ক ভাতার টাকার নিতেই জিৎকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এজাহারভুক্ত আসামি বিশ্বনাথকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে (১৫) সোমবার শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হবে।