আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ‘মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আজ চট্টগ্রাম নগরের সিআরবিতেছবি : সংগৃহীত

নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের সিআরবিতে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। প্রতিবছর ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করে। অর্থাৎ প্রতিবছরই এই সংখ্যাটা বাড়ছে। যাদের এর আগে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাদের কীভাবে ফেরত পাঠানো যায়, তা নিয়েই আমরা কাজ করছি।’

সিআরবির শিরীষতলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ‘মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ সব রাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করছি। সে জন্য ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে গিয়েছিলেন। সেখানেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল আসছে। প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও নিশ্চিতভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করব।’

রাখাইনে অভিযান পরিচালনা করাটা তাদের (মিয়ানমার) অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাখাইনের পরিস্থিতির কারণে আমাদের এখানেও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সেখানকার মর্টারশেল আমাদের দেশে এসে পড়েছে। এতে দুজন নিহত হয়েছেন। মিয়ানমারের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর ৩৩০ জনের মতো সদস্য আমাদের দেশে এসেছিলেন। আবার তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে সেটির প্রতিবাদ আমরা জানিয়েছি। সুতরাং আমরা আশা করব, এর আগে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেই ধরনের পরিস্থিতি উদ্ভব আবার হবে না।’

বিএনপির রাজনীতি নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার পরিবর্তন করতে হলে বিএনপিকে আগামী ’২৯ সালের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখন জনগণ যাদের ভোট দেবে, তারাই সরকার গঠন করবে। তবে বিএনপি সব পরীক্ষায় ফেল করেছে। এখন তারা আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুক। আরও বেশি করে পড়াশোনা করুক। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকার কাউকে বাধা দেবে না বলে জানান হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে সহিংসতা ও নৈরাজ্য করেছে। এসব আর করতে দেওয়া হবে না।