ঝালকাঠিতে প্রেমিকাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে তরুণের মৃত্যুদণ্ড

ঝালকাঠির নলছিটিতে তরুণীকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মো. সোহাগ মীরাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত
ছবি: সংগৃহীত

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় এক তরুণীকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মো. সোহাগ মীরা (২৫) নামের এক তরুণকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি সোহাগ আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন।

দণ্ড পাওয়া সোহাগ মীরা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের আলীপাড়া গ্রামের মো. সোবাহান মীরার ছেলে। ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এই হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়।

রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবদুল মন্নান। তিনি বলেন, আসামি সোহাগ মীরার সঙ্গে নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের বারইকরণ গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদারের মেয়ে ও ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী বেনজির জাহান ওরফে মুক্তার (১৯) প্রেম ছিল। সেই সূত্রে বেনজিরকে একটি স্মার্টফোন উপহার দেন সোহাগ। কিন্তু সোহাগের সন্দেহ হয়, ওই মুঠোফোন দিয়ে বেনজির অন্য কারও সঙ্গে কথা বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগ ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বেনজিরদের বাড়ির কাছে যান। সেখানে গিয়ে কলেজে যাওয়ার পথে বেনজিরের কাছ থেকে মুঠোফোনটি নিয়ে নেন তিনি। পরে আবার দুপুরে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরেন বেনজির। সোহাগ তখন ওই মুঠোফোন নম্বর থেকে বেনজিরের বাবার মুঠোফোনে কল দিয়ে ফোনটি নেওয়ার জন্য তাঁদের বাড়ির কাছে সড়কে বেনজিরকে ডাকেন। এ সময় বেনজির কাছে এলে সেখানে থাকা একটি বটগাছের নিচে তাঁর গলায় ছুরিকাঘাত করেন সোহাগ। পরে বেনজির গলা চেপে ধরে চিৎকার দিয়ে বাড়িতে গিয়ে লুটিয়ে পড়েন এবং মারা যান।

এ ঘটনায় পরদিন বেনজিরের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নলছিটি থানার পরিদর্শক মো. আবদুল হালিম ওই বছরের ৩১ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী মঞ্জুর হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’