কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়মের প্রতিবাদে চার হাউস টিউটরের পদত্যাগ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়প্রথম আলোর ফাইল ছবি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়মবহির্ভূত শর্তারোপ, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ডিন নিয়োগ, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের পদোন্নতি না দিয়ে শর্তারোপ ও শিক্ষকদের সঙ্গে অন্যায্য আচরণের প্রতিবাদে চারটি হলের চারজন হাউস টিউটর পদত্যাগ করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে তাঁরা পদত্যাগপত্র দেন। ভিন্ন ভিন্ন পদত্যাগপত্রে প্রায়ই অভিন্ন বিষয় লিখে তাঁরা পদত্যাগ করেন।

এসব অনিয়মের অভিযোগ তুলে এর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সিন্ডিকেট সদস্য, এক প্রাধ্যক্ষ, দুই সহকারী প্রক্টর ও এক হাউস টিউটর পদত্যাগ করেছেন।

নতুন করে পদত্যাগ করা চারজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের হাউস টিউটর ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিন; নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের হাউস টিউটর ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জয় চন্দ্র রাজবংশী; কাজী নজরুল ইসলাম হলের হাউস টিউটর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অর্ণব বিশ্বাস এবং শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের হাউস টিউটর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দীর্ঘদিন থেকে পদোন্নতি, আপগ্রেডেশন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকদের। উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে শিক্ষকেরা বর্তমানে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন। উপাচার্য শিক্ষকদের সাত দফা দাবি নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনায় বসছেন না। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের ওপর ক্ষুব্ধ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, তিনি কোনো অনিয়ম করছেন না। শিক্ষক সমিতির সদস্যরা নিজেরাই সংকট তৈরি করছেন।

১৯ মার্চ অ্যাজেন্ডাবহির্ভূত ও বেআইনিভাবে ডিন নিয়োগের প্রতিবাদে সিন্ডিকেটের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শেখ মকছেদুর রহমান। উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের হেনস্তার ঘটনায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক মো. কামরুল হাসান। শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও অশিক্ষকসুলভ আচরণের প্রতিবাদে ২০ ফেব্রুয়ারি হাউস টিউটরের পদ ছাড়েন পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুলছুম আক্তার।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের প্রতি অন্যায্য আচরণের প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টরের পদ ছাড়েন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান। এ ছাড়া অব্যবস্থাপনার অভিযোগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার।