ইঁদুরের গর্তে ঢুকেও কেউ রক্ষা পাবে না

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ সোমবার আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে
ছবি: প্রথম আলো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ইঁদুরের গর্তে ঢুকেও কেউ রক্ষা পাবে না। কোনো মানবতাবাদী রাষ্ট্র খুনিদের প্রশ্রয় দেবে না। দুজন খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আরও তিনজন খুনি কোথায় আছে, সে বিষয়টি কারও জানা নেই। তিনজনকে খুঁজে বের করে রায় কার্যকর করা হবে।

আজ সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে এই আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে ‘আইনি জটিলতা’র কথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কানাডার আইনে মৃত্যুদণ্ডের কথা নেই। তাদের আইনে বলা আছে, অন্য দেশের কেউ যদি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তাকে সেই দেশে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। আমরা এ বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে একটি জায়গায় জিতেছি। আশা করছি শিগগিরই তাকে ফিরিয়ে আনা যাবে।’

আরও পড়ুন

বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন না করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ধরার বিষয়ে সহযোগিতা করলে কাজটা এত কঠিন হতো না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বঙ্গবন্ধুর তিনজন খুনির কোনো হদিস নেই।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের কষ্ট প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ‘সময় খুব কঠিন। সারা বিশ্বে সবকিছুর অভাব। বাংলাদেশের মানুষের কষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বোঝেন। আমরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে দাবায়ে রাখা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটাই প্রমাণ করেছেন যে বঙ্গবন্ধুর রক্তকে দাবায়ে রাখা যায় না। বাংলার মানুষকেও দাবায়ে রাখা যায় না।’

আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা ১৯৭৫ সাল দেখেছি। আমার বয়স তখন ১৯ বছর। আমরা দেখেছি বাংলার মানুষের চোখ দিয়ে পানি পড়া। আমরা দেখেছি, বেইমানের অট্টহাসি ও মীর জাফরের চেহারা। তারপরও বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়াতে শিখেছি। আমি আপনাদের বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ে ছাড়বেন।’

আরও পড়ুন

রেলওয়ে জংশন স্টেশন চত্বর এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফার সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারোয়ার, সহকারী পুলিশ সুপার (কসবা সার্কেল) মো. কামরুল ইসলাম, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিয়ারা আক্তার প্রমুখ।

এর আগে মন্ত্রী সকালে ট্রেনে করে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছান। এরপর শোকমিছিলে অংশ নেন। পরে উপজেলা চত্বরে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আনিসুল হক।