অপরাধ
প্রতীকী ছবি

শেরপুরে পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূ পারভীন বেগমকে (৩২) গলা কেটে হত্যার পর তাঁর স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম (৩৮)  কীটনাশক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ সোমবার ভোরে শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের বয়ড়াপরানপুর গ্রামে পারভীন বেগমের বাবার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ অবস্থায় শফিকুলকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত গৃহবধূর বাবার বাড়ি লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে সদর উপজেলার বয়ড়াপরানপুর গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে পারভীন বেগমের সঙ্গে হাওড়া আমতলা গ্রামের মুন্তাজ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে ১০ ও ৭ বছরের দুই সন্তান আছে। কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শফিকুল-পারভীনের কলহ চলে আসছিল। এর জেরে পারভীন দুই মাস আগে হাওড়া আমতলা গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে বয়ড়াপরানপুর গ্রামের বাবার বাড়িতে চলে আসেন। পরে পারভীন শেরপুর শহরের নারায়ণপুর এলাকার আল বারাকা প্রাইভেট হাসপাতালে আয়া পদে চাকরি নেন। রোববার রাতে শফিকুল শ্বশুর বাড়িতে আসেন এবং রাতের খাবার শেষে স্বামী-স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েন। সোমবার ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় পারভীনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যার পর শফিকুল কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে সকালে পারভীনের মা জামেলা বেগম ঘরে উঁকি দিয়ে দেখেন, তাঁর মেয়ে গলাকাটা অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন এবং মেয়েজামাতার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে।

এ সময় জামেলার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে জড়ো হন। খবর পেয়ে সদর থানার-পুলিশ পারভীনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে এবং মুমূর্ষু অবস্থায় শফিকুলকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। শফিকুল বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিহত পারভীনের মা জামেলা বেগম অভিযোগ করেন, শফিকুল জুয়া খেলে টাকাপয়সা নষ্ট করতেন। এ নিয়ে স্ত্রী পারভীনের সঙ্গে কলহ চলছিল। এর জেরে শফিকুল তাঁর মেয়ে পারভীনকে খুন করেছেন। এ ঘটনার জন্য তিনি শফিকুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

সোমবার দুপুরে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশি পাহারায় জেলা সদর হাসপাতালে শফিকুলের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

জেলা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট আলমগীর মোস্তাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, শফিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। তবে দুই-তিন দিন তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।