রংপুরের তারাগঞ্জে বেগুন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩ টাকা কেজিতে

রংপুরের তারাগঞ্জের সবজির পাইকারি বাজারে বেগুনের ক্রেতা নেই। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরাছবি: প্রথম আলো

এক মাস আগেও রংপুরের তারাগঞ্জে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এখন চাহিদা না থাকায় সেই বেগুন ৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে বেশি লোকসান হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বেগুনচাষিরা।

কৃষি বিভাগ, চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারে তারাগঞ্জে ২১০ হেক্টর জমিতে বেগুনের চাষ হয়েছে। এক মাস আগেও প্রতি কেজি বেগুনের পাইকারি দর ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে ৮০-৯০ টাকায় পাওয়া যেত। মাস না ঘুরতেই এখন সেই বেগুন প্রতি কেজি ৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এরপরও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে চাষিদের লাভ তো দূরের কথা, বেগুন বিক্রি করে খেত থেকে বেগুন উত্তোলনের টাকাও হচ্ছে না। এ অবস্থায় অনেক চাষি খেত থেকে বেগুন তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে খেতেই নষ্ট হচ্ছে বেগুন।

গত সোম ও গতকাল মঙ্গলবার তারাগঞ্জের পাইকারি সবজি বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা বেগুন নিয়ে পাইকারদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। পাইকারেরা বেগুনের রং, মান অনুযায়ী তা কিনে নিচ্ছেন। প্রতি মণ বেগুন পাইকারিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বেগুনের বাজার হঠাৎ পড়ে যাওয়ার বিষয়ে ভীমপুর গ্রামের বেগুনচাষি সফিয়ার রহমানের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এক দেড় মাস আগেও পাইকারেরা বেগুনের জন্য আগাম টাকা দিয়ে আসছিলেন। কোনো দিন হাটোত আসি বেগুন বিক্রি করা লাগে নাই। সেই বেগুন এখন হাটোত আনি ঝামেলাত পড়ছি। বেগুন বেচে ভ্যানভাড়া, শ্রমিকের দাম উঠেছে না। নিয়াত করছু এটে থাকি যায় খেত ঢেলে দেইম।’

ইকরচালী গ্রামের বেগুনচাষি আজমখা বলেন, ‘বেশি দামের আশায় বেগুন নাগাছু। এ্যালা ফির তাক কায়ও খাবারে চাওছে না। লাভ তো দূরের কথা, বেগুন বেচে খরচের টাকা উঠেছে না। খেত ধরি খুব যন্ত্রণাত আছি।’

ওই হাটে কথা হয় পাইকারি ব্যবসায়ী বুড়িরহাট গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এখন বেগুনে সরবরাহ বেশি, চাহিদা কম। সে জন্য দাম কমে গেছে। আর মানুষ এখন যে সবজির দাম বেশি, সেটিতেই ঝুঁকে পড়ছেন। দাম কমার এটিও একটি কারণ। আমাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই।’