নির্মাণাধীন ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু, মালিক হাসপাতালে

নির্মাণাধীন ফিলিং স্টেশনের আগুন নেভানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বগুড়ার ধুনট উপজেলার সোনাহাটা বাজার এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার ধুনট উপজেলার সোনাহাটা বাজার এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গৃহবধূর স্বামী ও ফিলিং স্টেশনটির মালিক একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল।

মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম মিথিলা খাতুন (৩০)। দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন তাঁর স্বামী হলেন নিরব হোসেন (৪০)।

বুধবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ মিথিলার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিথিলার ফুফা কালেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জুলফিকার আলী।

স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দগ্ধ নিরব হোসেনের বাড়ি পাবনার নগরবাড়ি শাহজাদপুর এলাকায়। পাঁচ বছর আগে তিনি ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া গ্রামে নুরুল ইসলামের মেয়ে মিথিলা খাতুনকে বিয়ে করেন। এর পর থেকে তিনি সোনাহাটা বাজার এলাকায় জ্বালানি তেলের ব্যবসা করছেন। সম্প্রতি সেখানে তিনি সোনাহাটা অয়েল হাউস নামের একটি ফিলিং স্টেশনের নির্মাণকাজ শুরু করেন। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেই পাশেই বসবাস করতেন। গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে মিথিলা খাতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য গ্যাসের চুলায় খিচুড়ি রান্না করছিলেন। হঠাৎ তাঁর ওড়নায় আগুন ধরে যায়। দ্রুত মিথিলা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ওড়নাটি তেলের ভেতর পড়ে যায়। মুহূর্তে মধ্যে সবখানে আগুন ছড়িয় পড়ে। মজুত রাখা তেল, তিনটি ট্রাক্টর, তেলভর্তি দুটি ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা মেরামতের একটি দোকানসহ প্রায় দুই কোটি টাকার মাল পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বগুড়া ও ধুনটের দুটি ইউনিট এসে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

দগ্ধ মিথিলাকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিরবও দগ্ধ হন। পরে দুজনকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিথিলা মারা যান।

ধুনট ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার হামিদুল ইসলাম বলেন, নির্মাণাধীন ফিলিং স্টেশনে ডিজেল, পেট্রল, মোবিল ও কেরোসিন বিক্রি করা হয়। পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন। চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, দগ্ধ মিথিলা বুধবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন। তবে তাঁর স্বামী এখনো ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।