কুড়িয়ে পাওয়া বোতলে দা দিয়ে আঘাত, বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন আহত

বিস্ফোরণে কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়া ফারুক মিয়া। শনিবার সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বোতল সদৃশ বস্তুর বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের জিগাবাড়ির চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন জিগাবাড়ি গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে আবদুল হাকিম (৩৯), তাঁর স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৩), তাঁদের বড় ছেলে ফারুক মিয়া (২০) ও ছোট ছেলে রিপন মিয়া (১৭)।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজমিরুজ্জামান রাত ৮টায় ঘটনাটি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করে মুঠোফোনে বলেন, আহত চারজন ওই কুড়িয়ে পাওয়া বস্তুটি খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে ওই বস্তুতে দা দিয়ে আঘাত করলে এটি বিস্ফোরিত হয়। বোমা বিশেষজ্ঞ দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। এটি আসলে কী ছিল, বোমা বিশেষজ্ঞ দল এসে পরীক্ষার পর সেটি জানা যাবে।

বিস্ফোরণে চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া রিপন মিয়া। শনিবার সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও আহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, আজ সকালে আবদুল হালিম তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে তিস্তা নদীসংলগ্ন জমিতে জমে থাকা কচুরিপানা সরাতে যান। এ সময় কচুরিপানার নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় বোতল সদৃশ বস্তু পান। এটি কালো টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। আবদুল হালিম বস্তুটিকে গুপ্তধন ভেবে বাড়িতে নিয়ে যান এবং বিষয়টি গোপন রাখেন। বিকেলে নিজ বাড়ির উঠানে স্ত্রী ও ছেলেদের নিয়ে বস্তুটি খোলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দা দিয়ে ওই বস্তুটিতে আঘাত করলে এটি বিস্ফোরিত হয়।

বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে আবদুল হালিমের একটি পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো হয়েছে। বড় ছেলে ফারুকের একটি হাতের কবজি পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ছোট ছেলে রিপনের চোখ ও স্ত্রী পারুল বেগমের শরীর ঝলসে যায়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সুবর্ণা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণে একজনের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়েছে। একজনের পা, দুজনের চোখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়েছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।