আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণের দাবিতে উপাচার্য মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যায় তোলা
ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণের দাবিতে উপাচার্য মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপাচার্য নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা ওই বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে রাত নয়টার দিকে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে দাবি পূরণ না হওয়ায় তাঁরা বিক্ষোভ শেষ করে হলের সামনে গিয়ে হল থেকে পার্শ্ববর্তী ইসলামনগরগামী রাস্তা অবরোধ করেছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের প্রাধ্যক্ষ নিয়মিত হলে আসেন না। ফলে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিতে প্রাধ্যক্ষের বাসায় ও বিভাগে যেতে হয়। তাঁর দায়িত্বে অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন হলের ক্যানটিন বন্ধ থাকলেও তিনি সেটি চালু করার বিষয়ে উদ্যোগ নেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিটিউটের শিক্ষার্থী ও আল-বেরুনী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ বলেন, ‘হলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রাধ্যক্ষকে একাধিকবার অবগত করা হলেও তিনি ব্যবস্থা নেন না। এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ উত্থাপিত নানা অভিযোগের পর তিনি প্রাধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।’

এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন বশির আহমেদ, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলমগীর কবীরসহ প্রশাসনপন্থী কয়েকজন শিক্ষক।

ওই শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইনের বিষয়টি সিন্ডিকেট সভায় তোলা হয়। তবে সিন্ডিকেট সদস্যরা তাঁকে প্রাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণের বিষয়ে মতামত দেননি।’ এ সময় তাঁরা সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের কাছে কিছুদিন সময় চান। তখন উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তখন শিক্ষকেরা আবারও উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকে যান।

এরপর রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নূরুল আলমসহ ওই শিক্ষকেরা আবারও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তখন উপাচার্য, প্রাধ্যক্ষকে অপসারণসহ সব সমস্যা সমাধানে তদন্ত কমিটি করার ঘোষণা দেন। তবে শিক্ষার্থীরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আজকের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানান। এ সময় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বশির আহমেদের একটি মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সঙ্গেও বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকেরা বাসভবনে ঢুকে যান।

এরপর শিক্ষার্থীরা কিছুক্ষণ বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে হলে ফিরে যান এবং হল থেকে পার্শ্ববর্তী ইসলামনগরগামী রাস্তা আটকে দেন।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নূরুল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।