এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে মানববন্ধন
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামিদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাহানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বাংলা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম, প্রাণিবিদ্যা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দ ইসমাইল, আয়েশা আক্তার, মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার প্রতিনিধি সৈয়দ আকরাম আল সাহান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুহুল ইসলাম।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এমসি কলেজে তরুণী ধর্ষণের ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল সারা দেশ। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এমন নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। হাসিনা সরকার এ ঘটনার কোনো বিচার নিশ্চিত করেনি। বর্তমানে শোনা যাচ্ছে, কিছুসংখ্যাক লোক মামলাটির সাক্ষীদের ভিত্তিহীন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, শুধু একটি ঘটনা নয়, এর আগেও ছাত্রলীগের এক নেতা কলেজে পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রীকে কুপিয়েছিলেন। এসব ঘটনায় পরিষ্কার, ছাত্রলীগ কতটা বেপরোয়াভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করেছেন সংগঠনটির নেতা–কর্মীরা। পাশাপাশি শিক্ষকদেরও বিভিন্ন সময় তাঁদের রোষানলে পড়তে হয়েছে। শিক্ষকদের বন্দী করে রাখার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছেন তাঁরা।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ ও র্যাব। পরবর্তী সময়ে আদালতে তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেপ্তার সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
গ্রেপ্তারের পর আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আট আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর আটজনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। মামলাটি বর্তমানে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।