‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগ তুলে সরাইলে দুই প্রার্থীকে রুহুল কবির রিজভীর চিঠি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর চিঠি (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।

শোকজের চিঠি পাওয়া নেতারা হলেন সরাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও জেলা জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তার এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি হানিফ আহমদ। তবে নির্বাচন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন এ দুজন।

আলাদাভাবে দুজনকে শোকজ করা হলেও চিঠির বক্তব্য একই ছিল। এতে বলা হয়েছে, ১৫ এপ্রিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় আসন্নœউপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপির নেতা হিসেবে আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আপনার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ‘জালিয়াতির নির্বাচনে’ অংশগ্রহণ করা এই নেতাদের বিরুদ্ধে কেন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি দিতে বলা হয় তাঁদের দুজনকে।

সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে জেলার মাধ্যমে আমাদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা এগুলো ফেসবুকে শেয়ার করেছি।’

এ বিষয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শামীমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে ফেসবুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেখেছি। আমি এর কী জবাব দেব? এর আগে দুটি নির্বাচন করে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছি। এবার ভোটাররা আমার পাশে আছেন, আমাকে কথা দিচ্ছেন, তাঁরা আমাকে ভোট দেবেন। আমি নির্বাচন চালিয়ে যাব। এবার আমি বিজয়ী হব।’

এর আগে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় শামীমা আক্তারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু সেবারও তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি। পরে তিনি দলীয় পদ ফিরে পান।

ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হানিফ আহমদ বলেন, ‘নোটিশ ফেসবুকে দেখেছি। হাতে পাইনি। আমি এখন দলের কোনো পদে নেই। আমি নির্বাচন চালিয়ে যাব। মাঠ আমার পক্ষে আছে। আমি বিজয়ী হব।’

আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে সরাইল উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৪।