এবার গলাচিপায় কালো ডিম পাড়ল পাতিহাঁস

পটুয়াখালীর গলাচিপার চরবিশ্বাসে একটি দেশি পাতিহাঁস তিন দিনে তিনটি কালো ডিম পেড়েছে
ছবি: সংগৃহীত

এবার পটুয়াখালীর গলাচিপার চরবিশ্বাস ইউনিয়নে ক্লোজার বাজার এলাকায় একটি পাতিহাঁস তিনটি কালো ডিম পেড়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ডিমগুলো দেখার জন্য আসছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ক্লোজার বাজার এলাকার গৃহবধূ লাইজু আক্তার দীর্ঘদিন ধরে ১০টি পাতিহাঁস পালন করছেন। এর মধ্যে গত তিন দিনে একটি পাতিহাঁস ১টি করে কালো ডিম পেড়েছে। দেশি পাতিহাঁস কালো ডিম পেড়েছে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষ তা দেখার জন্য লাইজু আক্তারের বাড়িতে ভিড় জমান।

লাইজু আক্তারদের প্রতিবেশী নিজাম হাওলাদার বলেন, ‘হাঁসটি গত তিন দিনে তিনটি কালো ডিম পেড়েছে। আমরা এমন ডিম আগে কখনো দেখিনি।’

লাইজু আক্তার জানান, ‘তিনি তাঁর হাঁসগুলোকে স্বাভাবিক খাবারই খেতে দেন। তারপরও কেন কালো ডিম পেড়েছে, তা বুঝতে পারছি না।’

লাইজু আক্তারের স্বামী মোহাম্মদ সরদার বলেন, তিনি ডিম ভেঙে তার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাননি। অন্য ডিমের মতোই এগুলো স্বাভাবিক। ডিমের স্বাদও একই ধরনের।

এ বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলে উল্লেখ করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সজল কুমার দাশ বলেন, হাঁসটি কালো ডিম কেন পেড়েছে, এ ব্যাপারে এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। আপাতত এটিকে স্বাভাবিক হিসেবেই গ্রহণ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছর অক্টোবরের শেষ দিকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে একটি দেশি পাতিহাঁস কালো ডিম পেড়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে ভোলার চরফ্যাশনেও একটি দেশি পাতিহাঁস কালো ডিম পেড়েছিল।

তবে হাঁসের ডিম যে একেবারেই কালো রঙের হয় না, তা কিন্তু নয়। যুক্তরাষ্ট্রের কায়োগা জাতের হাঁসের ডিম সাধারণত কালো হয়ে থাকে।

ডিমের খোলস সাধারণত তৈরি হয় ক্যালসিয়াম কার্বনেটের মাধ্যমে। ডিমের খোলস সাধারণভাবে সাদা হলেও প্রায়ই হালকা সবুজ, নীলচে আভা ও হালকা গোলাপি রঙের ডিম চোখে পড়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, রঙের এই পরিবর্তনের পেছনে দুটি জৈব উপাদান ভূমিকা রাখে।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পাখি গবেষক আ ন ম আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাণিদেহের রক্তকণিকা ভেঙে বিলিভারডিন নামে একটি উপাদান বের হয়। এটা কম-বেশি হওয়ার কারণে ডিমের খোলসের রং নীলচে বা সবুজাভ হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে জরায়ুতে ডিমের খোলসটি পরিণত হওয়ার সময়ে তাতে গাঢ় সবুজ রঙের পিত্তরস বেশি থাকতে পারে। ওই দুটি উপাদান জরায়ুতে বেশি থাকলে তা থেকে ডিমটির রং কালো হতে পারে। এ ধরনের কালো ডিম হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে খুবই ব্যতিক্রম।