হাসেম ফুডের মালিক ও উপমহাব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

হাসেম ফুডের (সেজান জুস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেমপ্রথম আলোর ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডের (সেজান জুস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম ও উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন শ্রম আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ জেলা জজ কিরণ শংকর হালদার এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের পেশকার হাদি বিপ্লব প্রথম আলোকে বলেন, আসামিরা ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। ফৌজদারি কার্যবিধিতে বলা আছে, আদালত পরিবর্তন হলে আসামিদের আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিতে হয়। কিন্তু আসামিরা না যাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ২৮ এপ্রিল পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।

২০২১ সালের ৩০ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার পরিদর্শক নেসার উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন। কোভিড-১৯ সংকটে সুরক্ষা নিশ্চিত না করা, শিশু শ্রমিক নিয়োগ, কারখানার পূর্ব দিকে ছয়তলা ভবনের কক্ষে বায়ু চলাচল ব্যবস্থা না থাকা, পরিদর্শক কর্তৃক কাজের সময়সূচি অনুমোদন না করানো, কার্যকর নিরাপত্তা কমিটি না থাকাসহ আরও কয়েকটি অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম ও উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন তিনি।

মামলা করার এক সপ্তাহ পর ২০২১ সালের ৮ জুলাই রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুডের কারখানায় আগুনে পুড়ে কর্মকর্তা-শ্রমিকসহ ৫৪ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে কারখানার মালিক আবুল হাসেম ও তাঁর চার ছেলেসহ আটজনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মামলার বাদী নেসার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে অনিয়মের অভিযোগে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম ও উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে ৯টি বিভিন্ন ধারা ও বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছিল। মামলার আসামিরা ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে শ্রম আদালত স্থানান্তরিত হওয়ায় আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেননি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ শ্রম আদালত স্থানান্তর হয়। শহরের চানমারী আজমেরীবাগ এলাকায় শাহপরান টাওয়ারে নারায়ণগঞ্জ শ্রম আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।