অন্যরা এগিয়ে এলে সুস্থ হয়ে পড়ালেখায় ফিরতে পারবেন রাবির খাদিজা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা জাকির প্রীতি
ছবি: সংগৃহীত

ডিসেম্বরের ২২ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের বার্ষিক বনভোজন ছিল। বনভোজনের এক পর্যায়ে খাদিজা জাকির প্রীতির শরীর খারাপ করে। হঠাৎই শুরু হয় রক্ত বমি। তাৎক্ষণিক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে জানা যায় লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন খাদিজা। পরে রাজশাহী থেকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।

খাদিজার বাবা মো. জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছিল। কিন্তু লিভার সিরোসিস হয়েছে, এমনটা তাঁরা জানতেন না। এমনকি এ ধরনের কোনো উপসর্গও ছিল না। ঢাকায় হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বলেছেন, এক-দেড় মাসের মধ্যে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট (যকৃত প্রতিস্থাপন) করতে হবে। এই রোগের ভালো চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই। তাই ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এই চিকিৎসায় খরচ পড়বে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা।

খাদিজাদের বাড়ি টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার নাগরপুর গ্রামে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাবা জাকির হোসেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। দুই বোনের মধ্যে খাদিজা বড়।

জাকির হোসেন বলেন, তিনি মেয়েটাকে বাঁচাতে চান। এ জন্য তিনি তাঁর জমিজমা বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছেন। ভারতের বেঙ্গালুরুতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা ভিসার জন্য আবেদনও করেছেন। কিন্তু চিকিৎসার সব টাকা তাঁর পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা তারেক নূরের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। তিনি চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহায্য করতে চেয়েছেন। খাদিজার বিভাগেও কথা হয়েছে। তাঁরা সাহায্য করবেন। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে খুব উপকার হবে।

ছাত্র-উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই খাদিজার চিকিৎসার সঙ্গে তাঁরা আছেন। তাঁরাই রাজশাহী থেকে ঢাকায় পাঠিয়েছেন। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাঁর চিকিৎসায় অনেক টাকার প্রয়োজন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করবেন।

খাদিজার সহপাঠী মার্জিয়াতুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বাসই হচ্ছে না খাদিজা এত বড় রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসার খরচের জন্য দুই দিন ধরে তাঁরা রাজশাহী নগরের বিভিন্ন এলাকায় ভাগ হয়ে টাকা তুলছেন। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বিভাগ, আবাসিক হলে যাওয়া হবে। এ ছাড়া তাঁরা একটি কনসার্টেরও আয়োজন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁরা তাঁদের সহপাঠীকে বাঁচাতে চান।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খাদিজা শিক্ষার্থী হিসেবে খুবই ভালো। তাঁর চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। তাঁদের বিভাগটি নতুন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে দেশের হৃদয়বান ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে চিকিৎসাটা শুরু করা যাবে। তাঁরা চান, খাদিজা আবার সুস্থ হয়ে পড়ালেখা শুরু করুক।

সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা
মোহাম্মদ জাকির হোসেন, ডিবিবিএল শিমরাইল শাখা, অ্যাকাউন্ট নম্বর- ১২৮-১০১-১২৩১৮০। বিকাশ ও নগদ নম্বর ০১৭১৫১৩০৬১৪।