আওয়ামী লীগ থেকে ভাই বহিষ্কার, যুব মহিলা লীগ ছাড়লেন বোন

কক্সবাজার পৌর নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসেদুল হক ও তাঁর বোন জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করা তাহমিনা চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হওয়ায় মাসেদুল হককে গত শনিবার রাতে জেলা কমিটির সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করে কক্সবাজার আওয়ামী লীগ। এর এক দিন পর গতকাল রোববার রাতে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন মাসেদুলের ছোট বোন তাহমিনা চৌধুরী।

তাহমিনা চৌধুরী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। এতে তিনি লিখেছেন, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে কক্সবাজার যুব মহিলা লীগের সভাপতির পদ থেকে তিনি অব্যাহতি চাইছেন। এরপর নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তাহমিনা বলেন, ‘আমি আমার বাবার রক্তের কাছে দায়বদ্ধ।’

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য তাহমিনা চৌধুরীর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাহমিনার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, তিনি বড় ভাই মাসেদুল হকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। নারী ভোটারদের সংগঠিত করছেন। ভাইয়ের জন্যই দলের পদ ছেড়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন

মাসেদুল হক জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি নাগরিক কমিটির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামেন। মাসেদুলের প্রতীক নারিকেলগাছ।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাসেদুল হক মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে তাঁকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর যেকোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী অবস্থান নিলে তাঁদেরও দল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হবে।

আরও পড়ুন

মাসেদুল হকের ছোট ভাই শহিদুল হক জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আজ সোমবার পর্যন্ত মাসেদুলের পক্ষে প্রচারণায় নামেননি। মাসেদুলের ছোট আরও দুই ভাইয়ের মধ্যে শাহিনুল হক কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কায়সারুল হক জুয়েল কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। শুরু থেকে এই দুই ভাই মাসেদুলের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।

মাসেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নারিকেলগাছের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এটা তাঁর পরিবারের প্রতি মানুষের ভালোবাসা। তিনি বলেন, তাঁর পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর মরহুম বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম মোজাম্মেল হক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু দলের মনোনয়ন অযোগ্য প্রার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ জুন। নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।