ছাত্রলীগ নেতার হাঁসুয়ার কোপে আসমা বেগমের বাঁ হাতের দুটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে
ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় হাঁসুয়ার কোপে আসমা বেগম (৪৩) নামের এক গৃহবধূর বাঁ হাতের দুই আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পুঠিয়া পৌর ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক স্মরণ রহমানের বিরুদ্ধে ওই নারীকে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় করা মামলায় আজ রোববার অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ও তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় ওই নারীর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ও ছেলে মেহেদী হাসান আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি পুঠিয়া পৌর এলাকার মেডিকেলপাড়া এলাকায়। আজ সন্ধ্যায় আহত নারীকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বজনেরা।

এদিকে হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত স্মরণ রহমান ও তাঁর বাবা সেলিম ইবনে টিপুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। সেলিমের আরেক ছেলে মো. সায়েক (২২) পলাতক। তাঁদের বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামে।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে হাঁটাহাঁটি করছিলেন আসমা বেগম ও তাঁর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম। ছাত্রলীগ নেতা স্মরণ তাঁদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। এ সময় জাহাঙ্গীর তাঁর ছেলেকে হাসপাতালের সামনে আসতে বলেন। পরে স্মরণের বাবা সেলিমের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হচ্ছিল। একপর্যায়ে স্মরণ ও তাঁর ভাই সায়েক এসে হাঁসুয়া দিয়ে হামলা করেন। আসমা বেগম বাধা দিতে গেলে স্মরণের হাঁসুয়ার কোপ আসমা বেগমের হাতের তালুতে পড়ে। আরেকটি কোপে বাঁ হাতের ছোট দুই আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্মরণের বাবা হাতুড়ি দিয়ে আসমার ছেলে মেহেদীকে আঘাত করেন। জাহাঙ্গীর আলমকেও পায়ে কোপ মারা হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ পুলিশ এসে স্মরণ ও তাঁর বাবাকে আটক করে। পরে রাতে মামলা হয়।

আসমা বেগমের ছেলে মেহেদী বলেন, মাস ছয়েক আগে পৌর এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা স্মরণ মারধরের শিকার হন। তখন তিনি ঘটনাস্থল দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় স্মরণ ধারণা করেছেন, তিনি স্মরণকে মারধরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ নিয়ে অনেক দিন ধরে তাঁরা হামলা করার জন্য ঘুরছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় সুযোগ বুঝে তাঁরা হামলা করেন। পুলিশ গ্রেপ্তার করার সময় তাঁরা হত্যার হুমকি দিয়ে গেছেন।

মায়ের চিকিৎসার ব্যাপারে মেহেদী বলেন, ‘ডাক্তার বলেছে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করতে পারলে হাতটি বেঁচে যেতে পারে। এ কারণে আজ সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছি। কিন্তু টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি বলে এখনো ঢাকায় পাঠাতে পারিনি।’

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বলেন, ঘটনার পর জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে দুজনের নামে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় দুই আসামিকে তাঁরা গ্রেপ্তার করেছেন। আজ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।