খুলনায় এনসিপির শ্রমিকনেতাকে গুলির ঘটনায় নারী আটক
খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদারকে (৪২) গুলি করার ঘটনায় এক নারীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে নগরের সদর থানা এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈমুর ইসলাম।
আটক নারীর নাম মোসা. তনিমা ওরফে তন্বী। পুলিশ তাঁর পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি। তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তনিমা যুবশক্তির খুলনা জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব।
গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার তনিমার ভাড়া বাসায় মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, গুলিটি তাঁর মাথার চামড়া স্পর্শ করে বেরিয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে ‘বাসার ভেতরের অন্তঃকোন্দল’ হিসেবে দেখছে। সোনাডাঙ্গা এলাকার ভাড়া বাসার ভেতরেই গুলির ঘটনা ঘটে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। শুরুতে মোতালেব শিকদার পুলিশকে জানান, মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা তাঁকে রাস্তায় গুলি করে পালিয়ে গেছে। তবে পরে তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ঘটনাটি বাসার ভেতরেই ঘটেছে।
সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, গুলিটি মাথার চামড়া ছুঁয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় রক্তক্ষরণ হলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গতকাল দুপুরে বলেন, এনসিপির এক নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন—এমন তথ্য পাওয়ার পর ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। গাজী মেডিকেল কলেজের পাশের একটি ফার্মেসির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ওই ফুটেজে দেখা যায়, গত রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভুক্তভোগী ও তাঁর সঙ্গে থাকা আরও দুজন একটি গাড়িতে এসে গাজী মেডিকেলের পেছনের আল আকসা মসজিদের দিকের এলাকায় যান। ওই সূত্র ধরেই ঘটনাস্থল শনাক্ত করা হয়।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘মুক্তা হাউস নামের ওই ভবনে এসে আমরা বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ পাই। ঘরে ঢুকে দেখা যায়, সেখানে মাদকের ছড়াছড়ি—বিদেশি মদের বোতল, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম এবং একটি গুলির খোসাও উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা নিশ্চিত হয়েছি, সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তঃকোন্দলের কারণেই গুলির ঘটনা ঘটে। কারা জড়িত এবং সেখানে কারা যাতায়াত করত, তা যাচাই করা হচ্ছে।’