মানিকগঞ্জে কৃষিজমিতে ফেলা হচ্ছে পৌর বর্জ্য, আবাদ নিয়ে অনিশ্চয়তায় কৃষক 

বর্জ্যের মধ্যে আছে হাসপাতালের ওষুধের কাচের বোতল, সুই, সিরিঞ্জ, ব্লেড, কাচসহ বিপজ্জনক বিভিন্ন ফেলনা জিনিস।

মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট ভাগাড়ে না ফেলে ফেলা হচ্ছে পাশে কৃষিজমিতে। গত রোববার দুপুরে সদর উপজেলার ভাটবাউর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নির্দিষ্ট ভাগাড়ে না ফেলে পাশের কৃষিজমিতে ফেলা হচ্ছে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য। এতে ওই সব জমিতে ফসল আবাদ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। জমি থেকে বর্জ্য অপসারণ করে তা ভাগাড়ে ফেলতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

এ বিষয়ে গত ৩১ আগস্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কৃষি বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা। অভিযোগে স্থানীয় ১০৬ কৃষক ও জমির মালিকের স্বাক্ষর রয়েছে।

ভাগাড়টি পৌরসভা এলাকার বাইরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের ভাটবাউর এলাকায়। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভাগাড়টি ওখানকার কৃষিজমির জন্য মরণ ফাঁদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এটি নির্মাণের সময় স্থানীয় কৃষকদের জানানো হয়েছিল এখান থেকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন করা হবে। কম দামে এলাকার মানুষকে এসব বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সুবিধা দেওয়া হবে। কিন্তু এসবের কিছুই করা হয়নি। ভাগাড়ের ময়লা-আবর্জনা এখন কৃষিজমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। বর্জ্যের মধ্যে আছে হাসপাতালের ওষুধের কাচের বোতল, সুই, সিরিঞ্জ, ব্লেড, কাচসহ বিপজ্জনক বিভিন্ন ফেলনা জিনিস। জমি পরিষ্কার করতে গেলে এসব আবর্জনায় হাতে-পায়ে লেগে কেটে যায়।

স্থানীয় লোকজন জানান, ভাগাড়ের নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে প্রতিদিনই ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এসব ময়লা থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়িয়ে আশপাশের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। বাতাসে ভাটবাউর গ্রামে এই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে বসতবাড়িতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে থাকতে হয়। দুর্গন্ধের কারণে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পথচারীদের নাক চেপে চলাচল করতে হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অদূরে ভাটবাউর এলাকায় ভাগাড়ে প্রবেশের সড়ক ও পাশের কৃষিজমিতে বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এসব ময়লা-আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই প্রতিবেদকের উপস্থিতিতে বেলা একটার দিকে পৌরসভার একটি পিকআপ ভাগাড়ের কাছে কৃষিজমিতে ময়লা-আবর্জনার ফেলার সময় ট্রাকটির গতি রোধ করেন ভুক্তভোগী কৃষক ও জমির মালিকেরা। পরে ভাগাড়ের কাছে গিয়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়।

কৃষকদের ভোগান্তির বিষয়ে বক্তব্য জানতে পৌর মেয়র মো. রমজান আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি বর্তমানে বিদেশে আছেন। পরে প্যানেল মেয়র আবদুর রাজ্জাকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনিও ধরেননি।

পৌর বর্জ্য থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় ভাটবাউর, মুলজান ও ছুটি ভাটবাউরের শতাধিক কৃষকের লিখিত অভিযোগটি পেয়েছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার।