সিলেটে কোরবানির হাটে নজর কাড়ছে ‘মহারাজা’ ও ‘টানেল’
বিশাল আকৃতির দুটি গরু। রোদ ও গরমে হাঁসফাঁস করছিল। গরু দুটির স্বস্তির জন্য সামনে লাগানো হয়েছে ছোট একটি ফ্যান। পাইপ দিয়ে গরু দুটির শরীরে পানি ছিটিয়ে প্রশান্তি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল নামের এক ব্যক্তি। গতকাল রোববার বিকেলে সিলেটের স্থায়ী পশুর হাট কাজির বাজারে প্রবেশ করতেই এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
গরু দুটি লালন–পালন করেছেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল। তাঁর বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে। গত বৃহস্পতিবার তিনি গরু দুটি নিয়ে সিলেটে এসেছেন। পরে কাজির বাজারে পশুর হাটে গরু দুটি বিক্রির জন্য তুলেছেন।
গরুর খামারি আবু হেনা মোস্তফার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শখ করেই তিনি গরু দুটি লালন–পালন করেছেন। পাশাপাশি অন্য ব্যবসাও করেন। দুটি গরুর মধ্যে বড়টির নাম ‘মহারাজা’ এবং একটু ছোট গরুটির নাম ‘টানেল’। হলেস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের মহারাজার ওজন ৪০ থেকে ৪২ মণ। এটির বয়স প্রায় ছয় বছর। মহারাজার দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা। টানেলের এর ওজন প্রায় ৩০ থেকে ৩৪ মণ। প্রায় সাড়ে তিন বছর বয়সী টানেলের দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। দর-কষাকষি করেই গরু দুটি বিক্রি করার ইচ্ছে তাঁর।
আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, মহারাজা ও টানেল সম্পর্কে মামা-ভাগনে। মহারাজার মাকে দিয়ে গরু লালন–পালন শুরু করেন তিনি। পরে তাঁর খামারে গরু বাড়তে থাকে। মহারাজার মা প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ লিটার দুধ দিত। তাঁর খামারে শ্রেষ্ঠ গাভিদের মধ্যে ছিল মহারাজার মা। গরু দুটি লালন–পালনে তাঁর প্রায় ১৫ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়েছে। গত কোরবানির ঈদে তিনি মহারাজাকে হাটে তুলেছিলেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বিক্রি করেননি। তবে টানেলকে এবারই প্রথম বাজারে তুলেছেন। বর্তমানে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো যাচ্ছে না তাঁর। তাই গরু দুটি বিক্রি করে আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে চান।
মহারাজা ও টানেলকে দেখতে ভিড় করছেন অনেক মানুষ। কেউ কেউ গরু দুটির ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। ভিড়ে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ আহমেদ হোসেন বলেন, গরু দুটি বিশাল। হাটে এসে এত বড় গরু দেখে যে কারও চোখ আটকে যাবে। এত বড় এবং দামি গরু যদিও তাদের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। এরপরও ভিডিও করেছেন, পরিবারের সদস্যদের দেখানোর জন্য।
কিশোর তানিম হোসেন বলে, হাটে ঘুরে তাঁরা দুই বন্ধু মিলে গরু দেখছে। কোরবানির ঈদে গরু দেখতে তাদের ভালোই লাগে। এবার বাজারে এ দুটি গরু সব থেকে বড় মনে হয়েছে তাদের।
কাজির বাজার পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ফ্রিজিয়ান জাতের আরও বেশ কিছু গরু হাটে উঠলেও মহারাজা এবং টানেলের আকৃতি বড়। হাটে দেশি জাতের মাঝারি ও শাহিওয়াল জাতের গরু বেশি। রোববার বিকেল পর্যন্ত কোরবানির পশুর হাট তেমন জমে উঠেনি। তবে বিক্রেতারা আশা করছেন, সোমবার বিকেলের পর থেকে হাটে ক্রেতাদের সমাগম বাড়তে শুরু করবে, হাটও জমে উঠবে।