কুমিল্লায় এবারও জিপিএ-৫ ও পাসের হারে মেয়েরা এগিয়ে

এসএসসিতে প্রত্যাশিত ফল করতে পারা কুমিল্লা মর্ডান হাই স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উল্লাসছবি: এম সাদেক

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় এবারও মেয়েরা ভালো ফল করেছে। এ ছাড়া গতবারের চেয়ে পাসের হার, জিপিএ-৫, শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সামান্য বেড়েছে। বেড়েছে পাসের হারও। আজ রোববার বেলা ১১টায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ওই তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধিভুক্ত ছয় জেলার ১ হাজার ৭৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩২৫ জন অংশ নেয়। এর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮১ জন। পাসের হার ৭৯ দশমিক ২৩। ছেলেদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৬, মেয়েদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৪।

এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৯৫। বিজ্ঞানে ছেলেদের পাসের হার ৯৪ দশমিক ৭৪ ও মেয়েদের ৯৫ দশমিক ২১। মানবিকে পাসের হার ৬৬ দশমিক ৯৪। ছেলেদের পাসের হার ৬১ দশমিক শূন্য ৪, মেয়েদের পাসের হার ৬৮ দশমিক শূন্য ৬৯। ব্যবসায় শিক্ষায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৪৯। ছেলেদের পাসের হার ৭২ দশমিক ৫৩ ও মেয়েদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৩৬।

এ বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে ছেলে ৫ হাজার ২৬৪ ও মেয়ে ৬ হাজার ৮৩৬ জন। শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯৮।

আরও পড়ুন

গত বছর এ বোর্ডে ১ লাখ ৮২ হাজার ৬৩৫ জন পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২১৬ জন। পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৪২। ছেলেদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৭৯, মেয়েদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ১৪। বিজ্ঞানে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৮৪। মানবিকে পাসের হার ৬১ দশমিক ৮৪।  ব্যবসায় শিক্ষায় পাসের হার ৭৯ দশমিক ১১। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ৬২৩ জন। এর মধ্যে ছেলে ছিল ৪ হাজার ৭০৫ জন, মেয়ে ৬ হাজার ৯১৮ জন। এবার মেয়েদের জিপিএ-৫ কমেছে ৮২টি।আজ রবিবার এসএসসি ও সমমানের পরিক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর উল্লাসিত কুমিল্লা মর্ডান হাই স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা। এম সাদেক

ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগে গতবারের চেয়ে এবার পাসের হার কমেছে। তবে মানবিকে বেড়েছে। গত বছর শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল ৭৯টি। এবার বেড়েছে ১৯টি।
জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে চাঁদপুর জেলায় পাসের হার বেশি, ৮৩ দশমিক ৩২। সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ বেশি কুমিল্লা জেলায়, ৫ হাজার ৩৪৬ জন। শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কুমিল্লা জেলায়, ৪৪টি। নোয়াখালী ও ফেনী জেলায় পাসের হার বোর্ডের গড় পাসের হারের চেয়ে কম। লক্ষ্মীপুর জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সর্বনিম্ন ৮০০ জন।
এ বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে কুমিল্লা মডার্ন হাইস্কুল থেকে ১ হাজার ২২০ জন পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫৪ জন। বোর্ডে সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পেয়েছে এই বিদ্যালয়। এরপর কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে ৩৯৫ জন ও নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২৮৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। বোর্ডের অধিভুক্ত ছয় জেলা শহরের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বরাবরের মতো এবারও ভালো করেছে।
এদিকে ফল ঘোষণার পর কুমিল্লা নগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা উল্লাস করে। বাদ্যযন্ত্র বাজায়। শিক্ষার্থীরা সেলফি তোলে। নগরের মিষ্টি দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার বলেন, মেয়েরা পড়াশোনায় যত্নশীল। নিয়মিত পড়াশোনা করায় ওরা ভালো করেছে।

বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, গতবারের চেয়ে এবার ব্যবসায় শিক্ষায় পাসের হার কমেছে। বিজ্ঞানেও কিছুটা কমেছে। ফলে সামগ্রিক ফলের ওপর প্রভাব পড়েছে। মেয়েরা বরাবরের মতো এবারও ভালো করেছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নিজামুল করিম বলেন, গতবারের চেয়ে এবার পাসের হার কিছুটা বেড়েছে। গণিতে অকৃতকার্য হয়েছে ২১ হাজার ৫৯২ জন। ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী গণিতে অকৃতকার্য হয়েছে।