খাসপুকুরের পাড় থেকে কাটা হলো ২০টি চাম্বল গাছ

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার খাসপুকুরের পাড় থেকে গাছ কাটা হয়েছে। রোববার গাছগুলো নিয়ে যাওয়া হয়
ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌর এলাকায় লতাচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানাদেয়াল সংস্কারের অজুহাত দেখিয়ে সরকারি খাসপুকুরের উত্তর পাড় থেকে অন্তত ২০টি চাম্বলগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এসব গাছ কেটে নিয়েছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, লতাচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কুয়াকাটা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। এর পাশেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি পুকুর আছে। এ পুকুরের উত্তর পাড় থেকে ২০টি চাম্বলগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত দুই দিনে গাছগুলো কাটা হয়েছে।

এ নিয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, বিদ্যালয়ের সীমানাদেয়াল এ গাছের জন্য ফেটে গেছে। এ ছাড়া গাছগুলো কাটায় সড়কের প্রস্থ বাড়াতে সুবিধা হবে। তাই কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) কলাপাড়া আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে সারা দেশের মানুষ বিপর্যস্ত। পরিবেশের এমন দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে হলে অধিক পরিমাণে গাছ লাগানো দরকার। অথচ সেখানে পুরোনো গাছগুলো কেটে ফেলা কতটা যৌক্তিক, তা বুঝতে পারছেন না। গাছ কাটার এ ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো উন্নয়নকাজের জন্য গাছ কাটতে হলে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয়। সেখানে এ গাছগুলো কীভাবে কাটা হলো, তা বের করা দরকার।

স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৩৪ বছর আগে লতাচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি বিদ্যালয়ের পাশের খাসপুকুরের উত্তর পাড় ঘেঁষে এ গাছগুলো রোপণ করে। অথচ বিদ্যালয়ের কারও সঙ্গে আলাপ না করে কুয়াকাটা পৌরসভা হঠাৎ লোক লাগিয়ে গাছগুলো কেটে ফেলে। কাটা গাছগুলো গতকাল রোববার সকালে স্থানীয় একটি করাতকলে নিয়ে রাখা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম গাছ কাটা প্রসঙ্গে বলেন, ‘কে বা কারা গাছগুলো কেটেছে, স্কুল বন্ধ থাকায় তা আমরা দেখতে পারিনি। লোক মারফত শুনেছেন, কুয়াকাটা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ গাছগুলো কেটেছে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস বলেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ গাছগুলো কেটেছে বলে তিনিও শুনেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সরকারি জমিতে রোপণ করা গাছ কাটতে হলে কিছু প্রক্রিয়া মানতে হয়। গাছ কাটার অনুমোদন লাগবে, দরপত্র দেওয়া লাগবে। যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া গাছ কাটার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।