অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী, শাশুড়িসহ ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আদালতের রায়
প্রতীকী ছবি

হবিগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী, শাশুড়িসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. জাহিদুল হক আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের মো. রাসেল মিয়া (৩২), তাঁর মা তাহেরা খাতুন (৬০), বড় ভাই মো. কাউছার মিয়া (৩৫), বড় ভাইয়ের স্ত্রী রোজি বেগম (৩৩) ও বোন হোছনা বেগম (২৬)। তাঁদের মধ্যে কাউছার মিয়া রায় দেওয়ার সময় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে চুনারুঘাট উপজেলার পঞ্চাশ গ্রামের আবদুল সাত্তারের মেয়ে তাহেরা আখতার ওরফে আয়েশার সঙ্গে সাদেকপুর গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে রাসেল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ নানা বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। এ বিরোধের জেরে ২০১৬ সালে ১৪ সেপ্টেম্বর আসামিরা তাহেরা আখতারকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ সময় তাহেরা আখতার ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

এ ঘটনায় তাহেরা আখতারের বাবা আবদুল সাত্তার ২০১৫ বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর মো. রাসেল মিয়া, তাহেরা খাতুন, মো. কাউছার মিয়া, রোজি বেগম ও হোছনা বেগমকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

পু‌লিশ ২০১৭ সা‌লে তদন্ত শেষে মামলার চার আসা‌মি‌কে বাদ দিয়ে শুধু নিহত গৃহবধূর স্বামী রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। প‌রে মামলার বা‌দী অভিযোগপত্রের বিরু‌দ্ধে নারাজি আবেদন করলে আদাল‌তে বিষয়‌টি পি‌বিআইকে তদ‌ন্তের নি‌র্দেশ দেন। পি‌বিআইও চারজন‌কে বাদ দি‌য়ে আদাল‌তে অভিযোগপত্র দেয়। বা‌দী আবার পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রের বিরু‌দ্ধে নারা‌জি দি‌লে আদালত ওই চার আসা‌মি‌কে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেন।

পরে আজ বৃহস্পতিবার সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. জাহিদুল হক গৃহবধূর স্বামী, শাশুড়িসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। সাজা পাওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে একজন পলাতক থাকায় অন্য আসামিদের আদালতের নির্দেশে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এম এ মজিদ প্রথম আলোকে বলেন, এ রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

মামলার বাদী আবদুস সত্তার বলেন, তিনি এ রায়ে সন্তুষ্ট এবং তিনি এ রায় দ্রুত কার্যকর করা হবে বলে আশা করছেন।