মাঝ বৈশাখেও যেখানে শীতের আবহ

রংপুরে রাতে ও সকালে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গরম জামাকাপড় পড়ে পথে চলাচল করছে মানুষ। আজ সকালে রংপুর নগরের হাসনাবাজার এলাকায়ছবি: মঈনুল ইসলাম

কয়েক দিনের টানা তাপপ্রবাহ বিদায় নিয়েছে। নেই রোদ কিংবা লু হাওয়ার দাপট। আজ সোমবারের সকালটা যেন অন্য রকম। আকাশে সূর্যের দেখা নেই, মেঘে ঢাকা। বইছে মৃদুমন্দ হাওয়া। আগের রাতে বৈদ্যুতিক পাখা চালাতে হয়নি। মন্থরগতিতে পাখা চললেও পাতলা কাঁথাটা গায়ে টেনে নিতে হয়েছে।
বৈশাখের মাঝামাঝি সময়েও রংপুরে এ যেন শীতের আবহ। গত রাত থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, কিন্তু বৃষ্টি নেই। সেই সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস। এ যেন অসময়ে প্রকৃতির বৈরী আচরণ। শীত শীত অনুভূত হচ্ছে।

গত কয়েক দিনের টানা খরতাপে মানুষজন পথ চলতে গিয়ে একটু ছায়ার প্রয়োজন অনুভব করছিল। প্রচণ্ড খরতাপে একদিকে দরদর করে ঘাম ঝরছিল, আরেক দিকে গলা শুকিয়ে কাঠ। অফিস-আদালত, বাসাবাড়িতে বৈদ্যুতিক পাখাগুলো অনবরত ঘুরে চলছিল। কিন্তু সে দৃশ্যপট হঠাৎ পাল্টে গেল। পাখার ভনভনানি থেমে গেছে, উত্তরের হিমেল হাওয়া বইছে। নানা কারণে হঠাৎ গরমের উত্তাপ কমে গেছে। নেমে এসেছে খানিকটা শীতল পরিবেশ।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, উত্তর থেকে ধেয়ে আসা হিমালয়ের ঠান্ডা বাতাস বইছে। আজ সকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দু-তিন-চার দিন আগেও তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করেছে। বৈশাখ মাসেও গরমের মধ্যে শীত অনুভব হচ্ছে এখন। এটি জলবায়ু পরিবর্তনেরই প্রভাব।

আজ সকালে নগর ও শহরতলির জনপদে ঘুরে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল চালাতেও শীত লাগছে। আরোহীরা শরীরে জ্যাকেট পরে গন্তব্যে ছুটছেন। গ্রামের মাঠে যাঁরা কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যেও স্বস্তি কাজ করছে।
সাইকেলে প্যাডেল মেরে গ্রাম থেকে শহরে কর্মস্থলে ছুটে চলা চারজনের সঙ্গে কথা হয় নগরের নিসবেতগঞ্জ সেতুর কাছে। তাঁদের মধ্যে রাজেন্দ্রপুর এলাকার গৌতম কুমার বলেন, ‘দুই দিন আগেও অসহ্য গরম। সাইকেল চালাতেও কষ্ট হতো। আর এখন ঠান্ডা বাতাস।’

গতকাল রাত থেকে রংপুরের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। আজ সূর্যের দেখা নেই। তার ওপর রাত থেকে বাতাস বইছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া ধেয়ে আসছে।
রংপুরের কবি ও সাহিত্যিক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘গরমের সময় এমন ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীর-মনে আনন্দ দোল খাচ্ছে। গতকাল রাতে হালকাভাবে ফ্যান চললেও শরীরে কাঁথা জড়িয়ে নিতে হয়েছে।’
রংপুরের স্বাস্থ্য বিভাগীয় উপপরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, এই গরম, এই শীত এমন আবহাওয়ার কারণে সর্দি, জ্বর, কাশির প্রবণতা বাড়তে পারে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের হঠাৎ গলাব্যথাও দেখা দিতে পারে।