সংসারে সচ্ছলতা এনে দিয়ে বাড়িতে ফেরা হলো না ওমানপ্রবাসী বাবলুর

নিহত মো. বাবলু
ছবি: সংগৃহীত

অভাবের সংসারের হাল ধরতে আট বছর আগে ওমানে যান ফেনীর সোনাগাজীর মো. বাবলু (৩০)। ওমানের সালালাহ এলাকায় একটি কোম্পানিতে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। তাঁর আয়েই চলত দেশের পরিবার। ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁর দেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু বাড়িতে আসা হলো না। ওমানের সালালায় বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছেন।

নিহত মো. বাবলু ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের উত্তর চর চান্দিয়া গ্রামের মো. সেলিমের ছেলে। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে বাবলু সবার বড় ছিলেন।

নিহত বাবলুর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট বছর আগে মো. বাবলু ওমানে যাওয়ার পর থেকে তাঁর টাকায় চলতেন পরিবারের লোকজন। তাঁর আয়ের টাকা দিয়ে দুই বোনকে বিয়ে দিয়েছেন। এরই মধ্যে আট মাস আগে বাবলু ওমান থেকে টাকা পাঠিয়ে ছোট ভাই মো. শিবলুকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলেকে হারিয়ে বাক্‌রুদ্ধ তাঁর মা-বাবা। ছেলেকে বিয়ে করানো ও বাড়িতে পাকাঘর নির্মাণের স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।

বাবলুর বাবা মো. সেলিম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ছেলে বাসা থেকে প্রাইভেট কারে করে সালালাহ এলাকায় কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। ওই সময় ছেলের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়। পথে অপর একটি গাড়ির ধাক্কায় তাঁর ছেলে মারা যান। আহত হয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন।

বাবলুর চাচা মোতাহার হোসেন বলেন, ওমান থেকে বাবলুর লাশ দেশে ফেরত আনা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। কীভাবে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন।

সোনাগাজীর উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, কীভাবে বাবলুর লাশ দেশে আনা হবে, সে বিষয়েও আলোচনা চলছে।

এদিকে ৯ ফেব্রুয়ারি উত্তর সাইপ্রাসে নির্মাণাধীন ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মারা যান বাংলাদেশি যুবক মোহাম্মদ আলী সোহাগ (৩০)। তাঁর লাশ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেশে আনা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় সোনাগাজী উপজেলার মধ্যম চর চান্দিয়া এলাকায় নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।