গ্যাস–সংকটের অজুহাতে ভাড়া বৃদ্ধি, দুর্ভোগ

মৌলভীবাজারের তিনটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ। অন্য স্টেশনগুলোতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে মিলছে গ্যাস।

গতকাল দুপুরে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের ইসলামপুরে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারে তিনটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড। এতে অন্যান্য সিএনজি ফিলিং স্টেশনে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। লাইনে থেকে গ্যাস সংগ্রহ করতে চার-পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে চালকদের। এতে কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ায় মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলির বিভিন্ন সড়কে চালকেরা সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টমটমের ভাড়া ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড (জেজিটিডিএসএল), সিএনজি ফিলিং স্টেশন, সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকদের সূত্রে জানা গেছে, সিএনজি স্টেশনগুলোর জন্য গ্যাসের একটি মাসিক বরাদ্দ থাকে। সেই অনুযায়ী স্টেশন কর্তৃপক্ষ গ্যাস বিক্রি করে। এত দিন কড়াকড়ি না থাকায় কোনো কোনো সিএনজি ফিলিং স্টেশন বরাদ্দ থেকে বেশি গ্যাস বিক্রি করেছে। কিন্তু এখন সরকার গ্যাস সাশ্রয়ের নির্দেশ দেওয়ায় বরাদ্দের বাইরে গ্যাস বিক্রির সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতেও মাসিক বরাদ্দের গ্যাস নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হয়ে যাওয়ায় জেলার ১১টি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে ২০ জুলাই তিনটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে জেজিটিডিএসএল। ওই তিন প্রতিষ্ঠান হলো মৌলভীবাজারের মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং রাজনগরের ডেলটা সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশন।

একসঙ্গে তিনটি গ্যাস ফিলিং স্টেশন বন্ধ হওয়ায় জেলার অন্যান্য সিএনজি স্টেশনে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গাড়ির লাইন বাড়ছে। চালকেরা জানিয়েছেন, চার থেকে সাত ঘণ্টা লাইনে থেকে ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাঁদের। এতে যানবাহনের চালকদের কর্মঘণ্টার বড় একটি অংশ নষ্ট হচ্ছে।

মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের ইসলামপুরের হাজী ইকবাল ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নিতে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক রাসেল মিয়া গতকাল সোমবার দুপুরে বলেন, তিনি সোমবার ভোর চারটায় সিএনজি স্টেশনে গ্যাস নিতে আসেন। এরপর লাইনে থেকে বেলা সোয়া একটার দিকে গ্যাস পেয়েছেন।

সিএনজি ফিলিং স্টেশনে কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ৫ থেকে ১০টা বাড়িয়ে দিয়েছেন চালকেরা। এ নিয়ে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা লেগেই আছে। শহরের চৌমোহনা-কুসুমবাগের ভাড়া ৫ টাকা, নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। চৌমোহনা-বেরিরপাড়ের ভাড়া ৫ টাকা, নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। চৌমোহনা-ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ভাড়া ১০ টাকা, নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। শমসেরনগর সড়কে চৌমোহনা-চক্ষু হাসপাতালের ভাড়া ১০ টাকা, নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। চাঁদনীঘাট-এমপির বাজারের ভাড়া ২০ টাকা, নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা।

সহস্রাধিক অটোরিকশা বন্ধ, ভোগান্তি

আমাদের প্রতিনিধি, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গত রোববার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় সহস্রাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কে চলাচল করতে পারেনি। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই উপজেলার বাসিন্দারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় মোট সিএনজি ফিলিং স্টেশন আছে ১১টি। এর মধ্যে লোডশেডিং চলাকালে সরকারি নির্দেশনা না মেনে জেনারেটর চালানোর কারণে কমলগঞ্জের সিটি ওভারসিস সিএনজি ফিলিং স্টেশনটিতে রোববার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস সরবরাহ না করায় বিপাকে পড়েন অটোরিকশার চালকেরা।