‘সুইজারল্যান্ডের হয়ে যাঁরা চিৎকার করেছেন, তাঁরা আর্জেন্টিনার সমর্থক’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের খানজাহান আলী হলের সামনের চত্বরে বড় পর্দায় খেলা দেখছেন শিক্ষার্থী ও আশপাশের এলাকার মানুষছবি: সাদ্দাম হোসেন

মুহুর্মুহু চিৎকার ও হাততালি। কখনো ব্রাজিলের সমর্থকেরা আবার কখনো সুইজারল্যান্ডের পক্ষে। যখন যে দলের পায়ে বল তখন সেই দলের সমর্থকেরা চিৎকার করছেন, হাততালি দিচ্ছেন। এই দৃশ্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের খানজাহান আলী হলের সামনের চত্বরের। সেখানে দেড় থেকে দুই হাজার দর্শক হাজির হয়েছেন বড় পর্দায় খেলা দেখতে। কারও পরনে ব্রাজিলের জার্সি আবার কারও বা আর্জেন্টিনার। খেলার উন্মাদনা যেন ছড়িয়ে গেছে সবকিছুতেই।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ডিসিপ্লিনেই চলছে সেমিস্টার শেষের পরীক্ষা। কারও পরীক্ষা রাত পার হলেই, কারও পরদিন। তবে পরীক্ষার চিন্তা বাদ দিয়ে ওই হলের সামনে খেলা দেখতে হাজির হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ছাড়াও আশপাশের এলাকার মানুষ এসেছেন সেখানে খেলা দেখতে। ওই হলের সামনের চত্বরে বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। আর সার্বিক সহযোগিতা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরও পড়ুন

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্বকাপ শুরুর প্রথম দিকে ওই হলের সামনে প্রজেক্টর দিয়ে বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেখানে খেলা দেখতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ায় বড় টিভি স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর আরও বেশি দর্শক সেখানে খেলা দেখতে আসছেন। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো দলের যখন খেলা থাকে তখন দর্শক থাকে অনেক বেশি।

ওই চত্বরে ব্রাজিলের পতাকা নিয়ে খেলা দেখতে এসেছিলেন ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) মো. ফারহান সাদী। খেলা শেষে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাল (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা। কিন্তু প্রিয় দলের খেলা কি না দেখে পারা যায়? খেলা দেখব বলে আগ থেকে পড়ার সময় ভাগ করে নিয়ে পড়া শেষ করেছি। খেলা শেষে হলে গিয়ে ঘুমাব, সকালে উঠে পরীক্ষা দিতে যাব।’

আরও পড়ুন

গল্লামারী এলাকা থেকে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সুব্রত মণ্ডল। খুলনায় একটি ব্যাংকে চাকরি করেন তিনি। সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘ক্যাম্পাস ছেড়েছি বেশ কয়েক বছর হলো। কিন্তু এখনো ক্যাম্পাসে এসে খেলা দেখলে মনে হয় আবার সেই ছাত্রজীবনে ফিরে গেছি। সবার সঙ্গে খেলা দেখার আনন্দই অন্য রকম।’

খেলা চলাকালীন চত্বরের একপাশে নিজেদের মধ্যে খুনসুটি করছিলেন কয়েকজন। তাঁরা সবাই গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তৃতীয় বর্ষের শরিফুল ইসলাম আর্জেন্টিনার সমর্থক আর স্নাতকোত্তরের তেহসিন আশরাফ প্রত্যয় ব্রাজিলের। শরিফুল মনে করেন এবার কাপ আর্জেন্টিনাই নেবে, আর তেহসিনের বিশ্বাস বিশ্বকাপ যাবে ব্রাজিলের ঘরে। খেলার বিভিন্ন সময় তাঁদের একে অপরকে খোঁচা দিয়ে কথা বলতে দেখা যায়।

তেহসিন আশরাফ বলেন, এখানে যাঁরা সুইজারল্যান্ডের সমর্থক হিসেবে চিৎকার করছেন তাঁরা আসলে আর্জেন্টিনার সমর্থক। ব্রাজিল হারলেই তাঁরা খুশি হবেন। এ কারণে সুইজারল্যান্ডকে সমর্থন করছেন।

আরও পড়ুন