শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়
বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে তড়িৎ প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল (ইইই) বিভাগের প্রধান ইফতে খাইরুল আমিনের পদত্যাগের দাবিতে টানা চার দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবির মুখে তাঁকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দিয়েছে প্রশাসন। তবে স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রমে না ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার থেকে বিভাগটির স্নাতক প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত চলমান পাঁচটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। এর আগে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিভাগের বিভিন্ন সংকট ও বিভাগীয় প্রধানের আচরণগত সমস্যার কথা ছাত্র উপদেষ্টাদের জানিয়ে সমাধানের আহ্বান করেন। তবে সমাধান না পাওয়ায় ১৬ নভেম্বর থেকে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আসছেন। পরবর্তী সময়ে তাঁদের সঙ্গে অন্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একাত্মতা পোষণ করে চলতি সপ্তাহ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন। এতে বিভাগটির শিক্ষা কার্যক্রমে কার্যত অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ইফতে খাইরুল আমিনের মধ্যে শিক্ষকসুলভ আচরণ অনুপস্থিত। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন, কোর্সে পাস করার পাশাপাশি সার্টিফিকেট নিয়ে বের হতে না দেওয়ার হুমকি, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে অভিভাবকদের ফোন করে অপমান, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য কোনো সহযোগিতা না পাওয়া, কথা বলতে গেলে ভয় দেখানো, শিক্ষার্থীদের অপমান-অপদস্থ করার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সই করা এক অফিস আদেশে জানানো হয়, ‘তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সংশ্লিষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতে স্কুল অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিনকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ বিষয়টি নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইফতে খাইরুল আমিন বলেন, ‘সব অভিযোগের আগে তদন্ত হয়, আমার ক্ষেত্রে রায় শুনিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার কাছে অভিযোগের কোনো কপি দেওয়া হয়নি, জবাব দেওয়ারও সুযোগ দেওয়া হয়নি। বরং আমাকে সরাসরি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করছি। আমি নিজে থেকে কোনো অব্যাহতিপত্র দেব না। অভিযোগের জবাব দিতে আমি প্রস্তুত। যদি আমার কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন, শিক্ষার্থী কিংবা অ্যালমনাইদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করব। তবে অভিযোগের যথাযথ প্রমাণ থাকতে হবে।’
ইফতে খাইরুল আমিনের বিরুদ্ধের আনা অভিযোগের বিষয়ে গতকাল বুধবার বিকেল থেকে তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সাজেদুল করিম।