ভোলা সদরে ভোটারদের পথে পথে বাধা ও জাল ভোটের অভিযোগ প্রার্থীর

ভোলার সদর উপজেলায় সকাল থেকেই ভোটারের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। আজ সকালে চরসামাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তোলাপ্রথম আলো

ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের বিরুদ্ধে জাল ভোট প্রদান ও কর্মী-ভোটারদের পেটানো এবং ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন আরেক প্রার্থী। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই প্রার্থী।

অভিযুক্ত ওই প্রার্থীর নাম মো. মোশারফ হোসেন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিপক্ষ মোশারফের বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার সকালে এসব অভিযোগ এনেছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ইউনুছ মিয়া। তাঁর দাবি, যেখানে মোটরসাইকেলের সমর্থন কম, সেখানে পথে পথে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দিচ্ছেন আনারসের লোকজন।

মো. ইউনুছ মিয়া বলেন, ‘আমার অবস্থা খুব খারাপ। টবগী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি; পরে তদবির করে ঢুকিয়েছি। এখানে কেন্দ্রের চারপাশে রয়েছে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। তারা আধা কিলোমিটার দূরে থেকেই ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দিচ্ছে। মোটরসাইকেলের এক কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আহত হয়ে ওই কর্মী ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’

ইউনুছ আরও বলেন, ‘আমি পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আনারসের এজেন্টকে সিল মারতে দেখেছি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে বললে তিনি ব্যবস্থা নিয়েছেন, পরে আমি সেখান থেকে চলে এসেছি। এ ছাড়া পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের হাওলাদার বাজার এলাকায় পথে পথে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। দুজনকে পিটিয়ে আহত করেছে। একজনের নাম ইসমাইল, আরেকজন কাজী...।’

ইউনুছের এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই, আর তাঁদের অভিযোগের শেষ নেই। কয়েকটি কেন্দ্রে আমারও এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি; কিন্তু তাতে কী? আমি ঘুরে দেখেছি, সুন্দরভাবে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। ভোটারের ব্যাপক উপস্থিতি। আমার কোনো অভিযোগ নেই; ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। জনগণ এসে ভোট দিতে পারছে।’

আজ মঙ্গলবার সকালে ভোলা আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র, চরসামাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও উত্তর আলীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে ভোটারের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। ভোটাররা বলেন, নিয়ম মেনে সকাল আট থেকে ভোট কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ভোলার সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বাদশা মিঞা ওরফে বাসু মেম্বার (৭১) ভোট দেন চরসামাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ভোটের পরিবেশ খুবই সুন্দর এবং সহজেই পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পেরেছেন তিনি। তাঁর কোনো সমস্যা হয়নি। আর পথে তাঁকে কেউ বাধাও দেয়নি।

কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুর রশিদ খান বলেন, এ কেন্দ্রে সব এজেন্ট উপস্থিত আছেন। সুন্দরভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোনো সমস্যা নেই।

একই কথা জানান ভোলা জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু–সুন্দর ভোট হচ্ছে। সব কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়া হয়েছে, কোনো প্রার্থীর কোনো অভিযোগ নেই। যদি গ্যাঞ্জাম হয়ে থাকে, সেটা কেন্দ্রের বাইরে হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার টহল দল গিয়ে সেই পরিস্থিতি অনুকূলে এনেছে।’