লক্ষ্মীপুরে আটক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগে ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

লক্ষ্মীপুর জেলার মানচিত্র

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় আটকের পর আবদুর রহিম ওরফে রনি নামের এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগে সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন স্ত্রী। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদেশ পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন রায়পুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবু হানিফ, নুরুল ইসলাম ও আবু হানিফ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সফিক মিয়া, সাখাওয়াত হোসেন, কনস্টেবল ইউসুফ ঢালি ও আতিক উল্যা।

রায়পুর থানার পুলিশ বলছে, ১৮ ডিসেম্বর ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আবদুর রহিমসহ দুজনকে একনলা বন্দুক, ২টি কার্তুজ, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, ১৮০ পিস ইয়াবা, ২০০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। এরপর তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রহিম উপজেলার পূর্ব চরপাতা গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় গতকাল বিকেলে আবদুর রহিমের স্ত্রী রিনা আক্তার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলি অঞ্চল রায়পুর) মো. বেলায়েত হোসেনের আদালতে মামলার আবেদন করেন। বাদীর আইনজীবী আবদুল আহাদ শাকিল পাটওয়ারী বলেন, স্বামীকে মারধরের ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন রিনা। প্রথমে বিচারক কোনো আদেশ দেননি। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন বিচারক।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, গত ১৭ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের বর্ডার বাজার রায়পুর-চাঁদপুর সড়ক থেকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা রহিমকে আটক করেন। তখন তাঁর সঙ্গে গরু বিক্রির ৯০ হাজার টাকা ছিল। ওই টাকা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা নিয়ে গেছেন। পরে তাঁকে নিয়ে এসে মারধর করেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন। সেখানে পানি খেতে চাইলে নলকূপের সঙ্গে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। পরে রিনা আক্তার এসআই মো. আবু হানিফকে কল দিয়ে স্বামীর সন্ধান চান। মো. আবু হানিফ তাঁর স্বামীকে ছাড়তে দুই লাখ টাকা দাবি করেছেন। এত টাকা নেই বললে রহিমকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

মাধররের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে মামলার প্রধান অভিযুক্ত রায়পুর থানার এসআই মো. আবু হানিফ বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতির সময় অভিযান চালিয়ে রহিমকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও কয়েকটি মামলা হয়েছে। মামলা করার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।