ঈদের দিন ভাইয়ের পর বোনের মৃত্যু, আনন্দ হয়ে গেল বিষাদ

প্রতীকী ছবি

ফেনীর সোনাগাজীতে ঈদের দিন আবদুর রহিম ও হাজেরা আক্তার নামের দুই ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার মধ্যম চর চান্দিয়া এলাকায় বায়তুল আমান জামে মসজিদে ঈদের জামাতে নামাজ পড়া অবস্থায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে রাতে ফেনী শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছোট বোন হাজেরা মারা যান। এতে মুহূর্তেই পরিবারের সদস্যদের ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়।

সত্তরোর্ধ্ব আবদুর রহিমের মরদেহ গতকাল বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আজ শুক্রবার হাজেরা আক্তারের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

আবদুর রহিম ও হাজেরা আক্তার মধ্যম চর চান্দিয়া এলাকার মৃত মোজাফফর ইসলামের সন্তান। আবদুর রহিম বায়তুল আমান জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে। হাজেরার দুই সন্তান। ঈদের দিন দুই ভাই-বোনের মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শোনার পর শোক সইতে না পেরে ছোট বোন রাত সাড়ে নয়টার দিকে মারা যান।

পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সকালে আবদুর রহিম পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব সঙ্গে নিয়ে ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়তে স্থানীয় বায়তুল আমান জামে মসজিদে গিয়েছিলেন। তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মসজিদের মেঝেতে পড়ে গিয়ে আর উঠতে পারেননি।

আবদুর রহিমের ভাই ওবায়দুল হক বলেন, ‘আমি পেছনের কাতারে ছিলাম। ভাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। আমি দ্রুত নামাজ শেষ করে চিকিৎসার জন্য তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর স্বজনেরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও চিকিৎসক একই কথা বলায় লাশ বাড়িতে নিয়ে আসি।’

ওবায়দুল হক বলেন, আবদুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন। গতকাল বাদ আসর জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শোনার পর শোক সইতে না পেরে ছোট বোন রাত সাড়ে নয়টার দিকে মারা যান।

হাজেরা আক্তারের স্বামী আবু নাছের বলেন, তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে ফেনীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শোনার পর হাসপাতালের বিছানায় থেকে কান্নাকাটি করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে নয়টায় দিকে হাজেরা মারা যান। পরে তাঁরা লাশ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যান। আজ জানাজা শেষে হাজেরার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।