ভোটারদের বললেন, ‘কেমন চরিত্র আপনাদের?’

ভোটারদের দেওয়া টাকা ফেরত চেয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা রফিকুল ইসলাম ওরফে সংগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে (বাসাইল উপজেলা) সদস্যপদে হেরে রফিকুল ইসলাম ওরফে সংগ্রাম নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া টাকা ফেরত চেয়েছেন। জনপ্রতিনিধিদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে টাকা ফেরত চান রফিকুল। পরে অবশ্য নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে তিনি পোস্টটি সরিয়ে নেন। রফিকুল ইসলাম বাসাইল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।

রফিকুল ইসলাম ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে আমরা চারজন প্রার্থী ছিলাম। ভোটার ছিলেন ৯৪ জন। দিন শেষে জানা গেল, প্রত্যেক প্রার্থী ৫০-৬০ জন ভোটারকে টাকা দিয়েছেন। এর মধ্যে আমাকে ৬০ জন ভোটার কথা দিলেও ৫৫ জন আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। ভোট দিলেন মাত্র সাতজনে। এই হলো ভোটারদের আসল চরিত্র। পৃথিবীর সবকিছু একবার দেখলে চেনা যায়, শুধু মানুষ বাদে। আমাকে যারা ভোট দেননি, মনে হয় আপনাদের নামের তালিকা প্রকাশ হওয়ার আগে টাকা ফেরত দেওয়া উচিত। আপনারা না জনপ্রতিনিধি? ভোট আপনি যাকে খুশি তাঁকে দেন, এটা আপনার অধিকার। তাই বলে টাকা নেবেন চারজনের কাছ থেকে, ভোট দেবেন একজনকে! এটা কেমন চরিত্র আপনাদের? আপনাদের কাছ থেকে জনগণ কী সেবা পেতে পারে?’

এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রত্যেক প্রার্থী ৫০-৬০ জন ভোটারকে টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন। একজন ভোটারকে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। আবার অনেক ভোটারকে ৪০-৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। আমাকেও কিনতে হয়েছে। সর্বনিম্ন ২০ হাজারের নিচে কেউ টাকা নেননি। একজন ভোটার চারজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এমন হলে নির্বাচন কীভাবে করব? তওবা করছি ভবিষ্যতে আর কোনো নির্বাচনে দাঁড়াব না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভোটার বলেন, ‘প্রত্যেক ভোটার টাকা নিয়েছেন। আমি নিয়েছি একজনের কাছ থেকে। এ ছাড়া আরও দুজন আমাকে জোর করে টাকা দিয়েছেন। নির্বাচনে হেরে এখন টাকা ফেরত চাচ্ছেন তাঁরা।’

বাসাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান বলেন, ‘ভোটারদের টাকা দেওয়ার বিষয়টি এখন প্রার্থীরা বলছেন। এক প্রার্থী টাকা ফেরত চেয়ে ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন। প্রার্থীরা কেন ভোট কিনলেন, বুঝলাম না।’

বাসাইল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনি শংকর রায় বলেন, ‘নির্বাচনের আগে কেউ টাকা লেনদেনের বিষয়ে অভিযোগ করেননি। এখন হেরে গুজব ছড়াচ্ছেন। ভোটারদের টাকা দিয়ে থাকলে তিনি অন্যায় করেছেন।’

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্যপদে নাছির খান টিউবওয়েল প্রতীকে ৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।