স্বাদে অনন্য গাইবান্ধার রসমঞ্জুরি

গাইবান্ধার সুস্বাদু রসমঞ্জুরি
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু এক মিষ্টির নাম রসমঞ্জুরি। ভোজনরসিক কেউ গাইবান্ধায় এলে রসমঞ্জুরির স্বাদ পেতে চান। যাওয়ার সময় সঙ্গে করেও নিয়ে যান।

ব্যবসায়িকভাবে ১৯৪০ সালে গাইবান্ধায় প্রথম এই মিষ্টি বানানো শুরু হয়। ধীরে ধীরে এই মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এই মিষ্টি প্রথম বানিয়েছিলেন গাইবান্ধা শহরের সার্কুলার রোডের ‘মিষ্টি ভান্ডার’-এর মালিক রাম মোহন দে। সেই রসমঞ্জুরি ছড়িয়ে পড়ে জেলার অন্য মিষ্টির দোকানগুলোতেও।

কাচারিবাজার এলাকার ‘গাইবান্ধা মিষ্টান্ন ভান্ডার’-এর ব্যবস্থাপক এস এম রাশেদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, রসমঞ্জুরির চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে তাঁদের দোকানের বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। তবে দুধ ও চিনির দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় হতাশ তিনি।

আরও পড়ুন

বিভিন্ন দোকানের কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি রসমঞ্জুরি বানাতে সব মিলিয়ে ৩৫০ টাকার মতো খরচ হয়। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি রসমঞ্জুরি ৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যক্তি উদ্যোগে গাইবান্ধার রসমঞ্জুরি দেশের অন্যান্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন অনেকে। বিশেষ প্রক্রিয়ায় সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ক্রেতারা নিজের উদ্যোগেই এই মিষ্টি নিয়ে যান। এ বিষয়ে গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মকছুদার রহমান বলেন, একসময় রসমঞ্জুরির স্বাদ শুধু এই জেলার মানুষই পেতেন। এরপর সেই স্বাদ ছড়ায় দেশের অন্য জেলাগুলোতেও। এখন তো দেশের বাইরে যাচ্ছে রসমঞ্জুরি।

ছোট ছোট মার্বেল আকৃতির মিষ্টি দুধ জ্বাল দিয়ে ক্ষীরের মতো ঘন করে তাতে মেশাতে হয়
ছবি: প্রথম আলো

কারিগরেরা বলেন, এক কেজি রসমঞ্জুরি তৈরি করতে আড়াই কেজি দুধ, ১০০ গ্রাম চিনি, ২৫ গ্রাম ময়দা, ২০০ গ্রাম দুধের ছানা ও এলাচি লাগে। প্রথমে ছানার সঙ্গে ময়দা মিশিয়ে গুটি গুটি রসগোল্লা তৈরি করতে হয়। ছোট ছোট মার্বেল আকৃতির এই মিষ্টি দুধ জ্বাল দিয়ে ক্ষীরের মতো ঘন করে তাতে মেশাতে হয়। এভাবে তৈরি হয় সুস্বাদু রসমঞ্জুরি।

গাইবান্ধা জেলাকে পরিচিত করতে তিনটি পণ্যকে দিয়ে ব্র্যান্ডিং করছে জেলা প্রশাসন। পণ্য তিনটি হলো রসমঞ্জুরি, মরিচ ও ভুট্টা। তিনটি পণ্যকে নিয়ে স্লোগান তৈরি করা হয়েছে। তা হচ্ছে, ‘স্বাদে ভরা রসমঞ্জুরির ঘ্রাণ, চরাঞ্চলের ভুট্টা-মরিচ গাইবান্ধার প্রাণ’।

ব্যক্তি উদ্যোগে গাইবান্ধার রসমঞ্জুরি দেশের অন্যান্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করেন অনেকে
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রসমঞ্জুরিসহ তিনটি পণ্য বিক্রির জন্য স্মার্ট বাজার তৈরি করা হচ্ছে। অনলাইনের মাধ্যমে দেশ ও দেশের বাইরে থেকেও এসব পণ্য কেনা যাবে।

আরও পড়ুন