উপাচার্যের আশ্বাসে প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ তিন দফা দাবি পূরণে উপাচার্যের লিখিত আশ্বাসে আমরণ অনশন ভেঙেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলম জুস পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ এর নিচতলায় আমরণ অনশনে বসেছিলেন সাত শিক্ষার্থী। অনশন শুরুর কিছুক্ষণ পরে উপাচার্য কর্মসূচিস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের পাশে রাতভর অবস্থান করেন।
অনশন ভাঙানোর আগে শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি আদায়ের বিষয়ে লিখিত আশ্বাস দেন উপাচার্য মোহাম্মদ তৌফিক আলম। এতে তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগের পর থেকে ছয় মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করা হবে। মঙ্গলবারের মধ্যে বিভিন্ন রুটে আসনসংকট নির্ধারণ করে এসব রুটে বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স কেনার জন্য বিশেষ বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য রোববার মন্ত্রণালয়ে আবেদনপত্র দাখিল করা হবে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধিতে জমির পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে।
অনশন ভাঙানোর সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে আমার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। দাবি পূরণ করতে না পারলে আমি বিদায় নিব।’ এ সময় তাঁর ওপর আস্থা রাখতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান তিনি।
অনশনরত শিক্ষার্থী শওকত ওসমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দাবিগুলো পূরণের লিখিত আশ্বাস দেওয়ায় নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছি। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ফের মাঠে নামতে বাধ্য হব।’
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জমি অধিগ্রহণ ও শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত করা। গত ২৯ জুলাই মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গত ১৪ আগস্ট থেকে টানা এক সপ্তাহ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর, বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি ও মহাসড়ক অবরোধের পরও কোনো আশ্বাস না পেয়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন।
শিক্ষার্থী শওকত ওসমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরোলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো তৈরি হয়নি। ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য চারটি আবাসিক হলে জায়গা রয়েছে মাত্র দেড় হাজার শিক্ষার্থীর। শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, আবাসন, পরিবহন ও গ্রন্থাগারের সংকট তীব্র। এতে সেশনজট বাড়ছে।