বিদ্যুৎবিহীন সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

চট্টগ্রাম জেলার মানচিত্র

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে প্রায় ২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলার অনেক এলাকা। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন দুই উপজেলার অন্তত ৭০ হাজার গ্রাহক। তবে মিধিলির ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন দুই উপজেলার কৃষকেরা। আমন ধান ও শীতকালীন সবজি খেতের অনেক ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানা যায়। এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঝড়ের সময় সন্দ্বীপে আবদুল ওহাব (৭১) নামের এক ব্যক্তি গাছ পড়ে নিহত হয়েছেন।

গতকাল সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ঝোড়ো হাওয়ায় গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের লাইনে পড়ার কারণে আর সংযোগ দিতে পারেনি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। সন্দ্বীপ বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর উপজেলায় ৯টি ফিডারের অধীনে ৩৪ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। রাতে একটি ফিডার চালু করতে পেরেছেন তাঁরা। সকাল ছয়টার দিকে আরও দুটি ফিডার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছেন। বাকি ছয়টি ফিডার আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সচল করতে পারেননি।

সীতাকুণ্ড উপজেলায় বাড়বকুণ্ড বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যালয় ও ফৌজদারহাট বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যালয়ের মাধ্যমে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

বাড়বকুণ্ড কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজুল হক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গতকাল বেলা তিনটার দিকে বাড়বকুণ্ড বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যালয় থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন তাঁরা। তাঁর কার্যালয়ের অধীনে ১০টি ফিডারে মোট ৪৩ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। ২০ ঘণ্টা পর ছয়টি ফিডার চালু করতে সক্ষম হয়েছেন কর্মীরা। তিনি নিজেও সারা রাত বিদ্যুৎ–কর্মীদের সঙ্গে ছিলেন। এখনো বিদ্যুৎবিহীন তিনটি ফিডারের অধীনে অন্তত ১০ হাজার গ্রাহক। দুপুরের মধ্যে এ তিনটি ফিডার চালু করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

ফৌজদারহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ কাওসার মাসুম বলেন, তাঁর এলাকা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল না। মাঝেমধ্যে যে ফিডারে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেটি কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করেছেন আবার পুনরায় চালু করে দিয়েছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে সন্দ্বীপের শতাধিক ঘরবাড়িতে গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া আমন ধান ও শীতকালীন সবজি খেতে ঝড়ের আঘাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইসমাইল বলেন, সন্দ্বীপের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যানদের সঙ্গে তিনি কথা বলে জেনেছেন যে প্রায় ১০০ ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তাঘাটের ওপরে গাছপালা ভেঙে পড়েছে। আমন ধান ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, উপজেলার প্রায় ৪০ হেক্টর আমনের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে। শীতকালীন সবজির প্রায় ৮০ হেক্টর জমির গাছ ভেঙে বা নুয়ে পড়েছে। এ ছাড়া টমেটো চাষে ক্ষতি হয়েছে বেশি।