মৌলভীবাজারে ‘নিশ্বাসের জানালা’য় ফুলের হাসি
এই তো কিছুদিন হলো ঝুমঝুম বর্ষা গেছে। ধীরে শরৎও চলে গেছে। যদিও হঠাৎ বৃষ্টি ঝরা এখনো থামেনি। হুট করেই সাদা সব মেঘ সরিয়ে আকাশের নীল ঢেকে উড়ে আসছে কালো-ছাই মেঘের দল। গাছে–পাতায় বর্ষার ভেজা আদর জড়িয়ে থাকছে। মৌলভীবাজারে মনু নদের পাড়ে এক টুকরা ‘নিশ্বাসের জানালা’ শান্তিবাগ ওয়াকওয়ের এখানে-ওখানে ফুটছে নানা রঙের ফুল।
গতকাল শনিবার সকালে কখনো রিমঝিম করে, কখনো হালকা, আবার কখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ঝরেছে। হেমন্তের সকালবেলার বৃষ্টির এই অনুরাগ গাছের পাতায়, সবুজ ঘাসে নরম জলের ফোঁটা হয়ে মিশে আছে। শান্তিবাগ ওয়াকওয়েতে আসা মানুষ হেঁটে, বসে সময় পার করছেন। নারী-পুরুষ যাঁর যাঁর মতো ওয়াকওয়ে ধরে দৌড়াচ্ছেন, হাঁটছেন। ছোট ছোট দল হয়ে শরীরচর্চা করছেন অনেকে। পাশেই মনু নদ। শান্ত, ধীরলয়ে ভাটিতে ছুটে চলছে তার স্রোত।
ওয়াকওয়ে ধরে লাগানো নানা জাতের গাছে ফুল ফুটেছে। একদম পশ্চিম থেকে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত নানা জাতের ও রঙের ফুল নিঃশব্দে নীরবে ফুটছে। কাঁঠালচাপা, রাঁধাচূড়া, করবী, সমুদ্র জবা, স্থলপদ্মসহ চেনা–অচেনা অনেক ফুলের গাছে ফুল ফুটেছে। শুধু ওয়াকওয়ের ভেতরেই এমন না, ওয়াকওয়ের বাইরের দিকে মনু নদের বাঁ পাঁজর ছুঁয়ে রোপণ করা হিজল-করস, জারুল ও কদমের গাছগুলো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে গেছে। ওই সব গাছের ডালে কিছু শালিক, কিছু ফিঙে বসে লেজ দোলায়, ডানা মেলে এই গাছ থেকে ওই গাছে উড়ে যায়।
এই ওয়াকওয়ে তৈরি করেছে মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে শান্তিবাগ ওয়াকওয়েতে অনেক ধরনের ফুল, ঝাউসহ শোভাবর্ধনকারী গাছ লাগানো হয়েছে। লাগানো গাছ ও ফুলের মধ্যে আছে পাম, বিভিন্ন রঙের কাঠগোলাপ, বাগানবিলাস, হলুদ শিমুল, হলুদ কৃষ্ণচূড়া, সাদা কৃষ্ণচূড়া, লাল ক্যাশিয়া, হলুদ জাকারান্ডা, সাদা হিজল, মাউন্টেন পিংক, স্বর্ণ অশোক, পিংক শিমুল, অপরূপা চাপা, ফাগরিয়া, উইগো হলিয়া, কুরচি, মাউন্টেন ওরেঞ্জ, মি ট্রি ফ্লোরা ইত্যাদি। গাছগুলো এখন ফুলে–পাতায় রাঙিয়েছে ওয়াকওয়ের প্রকৃতি। রঙিন হয়ে ওঠছে উদ্যানের বুক।