নান্দাইলে ওজনে চাল কম, পরিবেশকের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্তের দাবি

সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল ওজনে দেওয়ার অভিযোগের পরিবেশকের বিরুদ্ধে পুনঃতদন্ত চেয়ে সংবাদ সম্মেলন। আজ সোমবার নান্দাইলের রসুলপুর ছিলার বাজারে
ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পরিবেশক (ডিলার) মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ওজনে চাল কম দেওয়ার ঘটনাটি নিরপেক্ষ কর্মকর্তাকে দিয়ে পুনরায় তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন কার্ডধারীরা।

আজ সোমবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের রসুলপুর ছিলার বাজারে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে রসুলপুর গ্রামের লোকজন, ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুস সামাদ, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১২ জন কার্ডধারী নারী-পুরুষ এবং ওজনে চাল কম দেওয়ার প্রতিবাদ করে পরিবেশকের হাতে মার খাওয়া তরুণ মোরাদ হোসেন ভূঁইয়াসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোরাদ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, স্থানীয় রসুলপুর ছিলার বাজারে (মুক্তবাজার) সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নিয়োজিত পরিবেশক হচ্ছেন মো. মোজাম্মেল হোসেন। তিনি নান্দাইল উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। বাজারে তাঁর চাল বিক্রির দোকান রয়েছে।

গত ১৩ এপ্রিল পরিবেশক মোজাম্মেল হক কার্ডধারী গ্রাহকদের কাছে চাল বিক্রির সময় ৩০ কেজির স্থলে ২৭ থেকে ২৮ কেজি করে চাল বিক্রি করছিলেন। ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ জানালে পরিবেশক ও তাঁর লোকজন মিলে রসুলপুর গ্রামের মোরাদ হোসেন ভূঁইয়াকে মারধর করে আহত করেন। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি মারধরের ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ ঘটনায় গত ১৪ এপ্রিল প্রথম আলোয় ‘চাল কম দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তরুণকে মারধর’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। মোরাদ সুস্থ হয়ে চাল কম দেওয়া ও তাঁকে মারধর করার ঘটনায় ১৭ এপ্রিল নান্দাইলের ইউএনওর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিলে মোরাদ ২৭ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। মোরাদ সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, গত ২ মে নান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে তাঁর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনি চাল কম পাওয়া কার্ডধারীদের নিয়ে গেলেও কমিটির সদস্যরা তাঁদের বক্তব্য গ্রহণ না করে অভিযুক্ত পরিবেশককে অভিযাগ থেকে রেহাই দেন।

৩৫৮ নম্বর কার্ডধারী মো. আনহাস মিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজির চালের দাম ৪৫০ টাকা পরিশোধ করার পরও পরিবেশক তাঁকে ২৮ কেজি চাল দিয়েছেন। সরকারি দলের লোক বলে আমি প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি।’

২৬৭ নম্বর কার্ডধারী হাদিসা বলেন, চাল কম পেলেও মেনে নিই। প্রতিবাদ করলে কার্ড বাতিল করার হুমকি দেওয়া হয়। ৪১১ নম্বর কার্ডধারী সুফিয়া বলেন, আগে ৩০ কেজির বস্তায় করে চাল দেওয়া হতো। এখন বস্তা খুলে চাল মেপে দেওয়া হয়। বাড়িতে নিয়ে চাল মাপলে ২৮ কেজির বেশি হয় না। আমাদের মতো গরিবদের প্রতিনিয়ত ঠকানো হচ্ছে। অথচ প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিরীহ তরুণকে মারধর করা হয়েছে। কার্ডধারীরা চাল কম দেওয়ার এ ঘটনার পুনঃতদন্ত করে দোষীদের বিচার চান।